ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
‘জাতীয় সমাবেশ ২০২৫’ শীর্ষক এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শনিবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীদের ঢল নামে রাজধানীতে। মিছিল আর স্লোগানে ভরে ওঠে উদ্যানের চারপাশ, তৈরি হয় জনসমুদ্রের দৃশ্য।
সমাবেশের মূল কার্যক্রম নির্ধারিত ছিল দুপুর ২টা থেকে, তবে তার আগেই সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। উপস্থাপনায় ছিলেন সাইফুল্লাহ মানসুর, পরিবেশনায় ছিল সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী। এরপর বিভিন্ন বিভাগের সাংস্কৃতিক দলগুলোও একে একে অংশ নেয়।
মঞ্চ নির্মাণ, লজিস্টিকস ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা মধ্যরাতের মধ্যেই সম্পন্ন করা হয়। গোটা উদ্যানে জামায়াতের প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ দেখা যায় স্পষ্টভাবে। প্রধান মঞ্চে টানানো ব্যানারে লেখা ছিল ‘জাতীয় সমাবেশ ২০২৫’। লাল কার্পেট ও অস্থায়ী ছাউনিতে সাজানো হয় শহীদ পরিবার, প্রবাসী প্রতিনিধি ও বিশেষ অতিথিদের জন্য আসন।
সকাল থেকেই শাহবাগ, মৎস্য ভবন, হাইকোর্ট, পলাশী ও টিএসসি হয়ে একের পর এক মিছিল এসে জড়ো হতে থাকে সমাবেশস্থলে। অংশগ্রহণকারীদের কেউ জাতীয় পতাকা, কেউবা দলীয় মনোগ্রাম খচিত পোশাকে সজ্জিত ছিলেন। প্রতিটি মিছিলেই বহন করা হচ্ছিল দলীয় প্রতীক।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থেকে আসা সোহেল হাসান জানান, তাঁদের উপজেলা থেকেই প্রায় ৪০টি বাসে ৩০ হাজার কর্মী ঢাকায় এসেছেন। সিরাজগঞ্জ থেকে এরশাদ আলী জানান, বাস ও ট্রেনযোগে সেখান থেকেও প্রায় ৩০-৪০ হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। অনেকেই আগের রাতেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন।
প্রায় ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক এদিন নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করেন। তারা ভোর থেকে হাইকোর্ট, শাহবাগ, মৎস্য ভবনসহ বিভিন্ন প্রবেশপথে আগতদের গাইড করেন। উদ্যানে বসানো হয় ৩৩টি এলইডি স্ক্রিন, ৩০০ মাইক, মোবাইল টয়লেট, মেডিকেল বুথ ও নামাজের জন্য পৃথক স্থান। খাবার পানির ব্যবস্থাও রাখা হয় উপস্থিতদের জন্য।
দুপুরে সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে জামায়াতের নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, “এই সমাবেশে আমাদের দাবিগুলো জাতির সামনে তুলে ধরা হবে। ইনশাল্লাহ স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমাগম হবে এখানে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকতেই বোঝা যায়, মানুষ কতটা আগ্রহ নিয়ে এসেছে।”
সমাবেশে উত্থাপিত সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে:
* জাতীয় নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা
* গণহত্যাগুলোর বিচার
* মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়ন
* ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র কার্যকর
* জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন
* সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু
* প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা
আগে দলটি বায়তুল মোকাররম বা পল্টন কেন্দ্রিক ছোট পরিসরে কর্মসূচি করলেও এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ আয়োজন করে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি ও জনসমর্থনের বার্তা দিতে চায়। নেতাদের বিশ্বাস, এ সমাবেশ আগাম নির্বাচন ও দেশের রাজনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট হয়ে থাকবে।
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...