বিজ্ঞাপন
মানুষ অজান্তে কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল করতে পারে, যা থেকে ক্ষমা চাওয়া এক মুমিনের গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। মহান আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত চিত্তে ক্ষমা চাওয়ার জন্য কোরআন ও হাদিসে অনেক সুন্দর ও হৃদয়গ্রাহী দোয়া শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দোয়া উল্লেখ করা হলো:
আদম (আ.)-এর দোয়া
উচ্চারণ:
رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
বাংলা উচ্চারণ: রাব্বানা যালামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানাকুনান্না মিনাল খাসিরিন।
অর্থ: "হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা আমাদের নিজেদের ওপর জুলুম করে ফেলেছি। তুমি যদি আমাদের ক্ষমা না করো ও আমাদের প্রতি দয়া না করো, তবে আমরা নিঃসন্দেহে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।"
(সূরা আরাফ, আয়াত ২৩)
ভুল ও অজ্ঞতার জন্য ক্ষমা চাওয়ার দোয়া:
উচ্চারণ:
رَبِّ اغْفِرْ لِي خَطَايَايَ وَجَهْلِي
বাংলা উচ্চারণ: রাব্বিগফিরলি খাতায়ায়া ওয়া জাহলি।
অর্থ: "হে প্রভু! আমাকে ক্ষমা করুন, আমার ভুল ও অজ্ঞতাগুলোকেও ক্ষমা করুন।"
(বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)
গোপন ও প্রকাশ্য গোনাহ থেকে মুক্তির দোয়া:
উচ্চারণ:
رَبِّ اغْفِرْ لِي مَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْت
বাংলা উচ্চারণ: রাব্বিগফিরলি মা আসরারতু ওয়া মা আলানতু।
অর্থ: "হে প্রভু! আমি গোপনে ও প্রকাশ্যে যা করেছি, আপনি তা ক্ষমা করে দিন।"
(মুসনাদে আহমাদ)
আত্ম-অত্যাচারের পর মাফ চাওয়ার দোয়া:
উচ্চারণ:
سُبْحَانَكَ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي، فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
বাংলা উচ্চারণ: সুবহানাকা ইন্নি যালামতু নাফসি ফাগফিরলি ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ্জুনুবা ইল্লা আনতা।
অর্থ: "হে আল্লাহ! তুমি পবিত্র, আমি নিজের ওপর জুলুম করেছি, অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। নিশ্চয়ই তুমি ছাড়া আর কেউ গোনাহ মাফ করতে পারে না।"
(তিরমিজি)
তাওবা কবুলের দোয়া:
উচ্চারণ:
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَتُبْ عَلَيَّ، إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الْغَفُورُ
বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্য, ইন্নাকা আনতা তাওয়্বাবুল গাফুর।
অর্থ: "হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি পরম তাওবা গ্রহণকারী, অতিশয় ক্ষমাশীল।"
(মুসনাদে আহমাদ, আদাবুল মুফরাদ)
ক্ষমা চাওয়ার গুরুত্ব:
নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বয়ং নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ বার ইস্তেগফার করতেন। যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হতো কেন তিনি এতবার তাওবা করেন, তখন তিনি বলতেন:
أَفَلَا أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا
"আমি কি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ বান্দা হবো না?"
(সহিহ বুখারি)
ক্ষমা প্রার্থনা একজন মুমিনের নিত্যদিনের ইবাদতের অংশ হওয়া উচিত। গোনাহ হোক বড় বা ছোট—তাওবার দরজা কখনো বন্ধ হয় না। তাই ভুল করলে কিংবা গোনাহ হয়ে গেলে, উপরোক্ত দোয়াগুলোর মাধ্যমে আন্তরিকভাবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।
-এমকে
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...