Logo Logo

মানুষ আমাদের কাছে এসে সমস্যার কথা বলছে : মির্জা ফখরুল


Splash Image

"জনগণ এখন আমাদের কাছে এসে নিজেদের সমস্যার কথা বলছে। আগে এমপি-মেয়রদের কাছে যেত, কথা বলতে পারত। এখন তারা আর পারছে না।"—এভাবেই রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক দুর্দশা তুলে ধরলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।


বিজ্ঞাপন


আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘জুলাই–আগস্ট গণ–অভ্যুত্থান’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুক্ত গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও রাজনৈতিক ঐক্যমতের ওপর গুরুত্বারোপ করেন ফখরুল।

বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, “একজন সাধারণ নাগরিকেরও ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু এখন সেই অধিকার বাস্তবায়িত হচ্ছে না। বর্তমানে দেশে এক ধরনের প্রবণতা দেখা দিচ্ছে—লিবারেল ডেমোক্রেসি পিছিয়ে পড়ছে, পপুলিস্ট রাজনীতির কাছে পরাজিত হচ্ছে। গবেষকরা হয়তো এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে পারবেন, কিন্তু আমরা এর কষ্টকর বাস্তবতা অনুভব করছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা মুক্তি পেয়েছিলাম ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে, পরে পাকিস্তানি শাসন থেকে। কিন্তু এখনো আমরা এক ধরনের গোলামিতে রয়েছি—এবার সেটা আমাদের নিজেদের দেশেরই প্রভুদের দ্বারা। এই অবস্থা থেকে মুক্ত হতে হলে রাষ্ট্র ও সমাজের ভিত্তিতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে।”

বিএনপি মহাসচিব গতকাল বুধবার আশুলিয়ার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত পাঁচজনের স্মরণে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “এক মা তাঁর কোলে ১৪ মাসের শিশু নিয়ে বললেন, আমার স্বামীকে এখানে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। আমি জানি না, এই শিশুকে নিয়ে এখন কী করে বাঁচব। তখন আমার মনে প্রশ্ন জেগেছে—রাষ্ট্রটা আসলে কার জন্য?”

২০২৪ সালের আগস্টে বিএনপির এক সভা থেকে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের যে দাবি তিনি করেছিলেন, সে বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ফখরুল বলেন, “তখন অনেকে বলেছিলেন আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়েছি। এখন তারাই বলছেন—ক্ষমতা যার, তার হাতেই ফিরিয়ে দিতে হবে।”

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বিষয়ে তিনি জানান, ইতোমধ্যে ১২টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, বাকি বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা চলছে।

আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরস্পর সম্পর্ক ও শালীনতার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “কাদা ছোড়াছুড়ি একটা পর্যায়ে গিয়ে থামা উচিত। না হলে রাজনীতি কলুষিত হবে আরও।”

আলোচনা সভায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সময় নির্যাতিত পাঁচজন সম্পাদককে সম্মাননা দেওয়া হয়। এরা হলেন—দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, দৈনিক যায়যায়দিনের সম্পাদক শফিক রেহমান, নিউ এজ-এর সম্পাদক নুরুল কবির এবং দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাহমুদুর রহমান ও মতিউর রহমান চৌধুরী।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া। অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরী ও মাহমুদুর রহমান, শহীদ জাবির ইব্রাহিমের পিতা কবির হোসেন এবং শহীদ আবদুল্লাহ বিন জাহিদের মা ফাতেমাতুজ জোহরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘জুলাই বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি আবৃত্তি পরিবেশন করেন দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...