গ্রাফিক্স : ভোরের বাণী।
বিজ্ঞাপন
বিভিন্ন দাবিদাওয়া ও রাজনৈতিক রূপরেখা ঘোষণা কেন্দ্র করে আয়োজিত এই কর্মসূচিগুলো ঘিরে রাজধানীতে ব্যাপক প্রস্তুতি, সতর্কতা ও জনসাধারণের মধ্যে উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে গঠিত এনসিপি আজ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে তাদের ‘জুলাই পদযাত্রা’র সমাপ্তি ঘোষণা করবে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ‘জাতীয় ইশতেহার’ প্রকাশ করবে।
বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে এই সমাবেশ, যেখানে জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি তুলে ধরা হবে।
গতকাল আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই সনদের ভিত্তিতেই পরবর্তী নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচনী সংসদের হাতে সংস্কার কার্যক্রম ছেড়ে দিব না, বরং জুলাই সনদের ভিত্তিতে সংসদ বা গণপরিষদ গঠিত হবে।”
তিনি আরও জানান, আজকের সমাবেশ থেকেই নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা ও রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে, যার মাধ্যমে এনসিপি ভবিষ্যৎ রাজনীতির দিকনির্দেশনা দিবে।
জনদুর্ভোগ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আগামীকাল এইচএসসি পরীক্ষা রয়েছে, সাথে রয়েছে ছাত্রদলের আরেকটি সমাবেশ। তাদের শহিদ মিনারে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি থাকলেও আমাদের অনুরোধে তারা শাহবাগে সরেছে। এজন্য আমরা তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তবে যানজট হতে পারে, এজন্য ঢাকাবাসীর কাছে অগ্রিম দুঃখ প্রকাশ করছি।”
সরকারের ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের সম্ভাবনা নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি সরকার ৫ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে যাচ্ছে। আমরা সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই, তবে জুলাই সনদের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ সুরাহা চাই।”
এদিকে, একইদিন দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শাহবাগে ‘ছাত্র সমাবেশ’ করতে যাচ্ছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তিকে কেন্দ্র করে আয়োজিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সমাবেশে অংশ নিতে দেশজুড়ে প্রায় ৯০টি সাংগঠনিক ইউনিট গঠন করেছে ছাত্রদল। উপস্থিত থাকবেন জুলাই আন্দোলনে শহিদদের পরিবারের সদস্য ও আহত নেতাকর্মীরাও।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের আন্দোলনে ছাত্রদল ছিল অগ্রণী। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আমাদের ১৪২ নেতাকর্মী শহিদ হয়েছেন। আমরা সেই বীর সন্তানদের স্মরণ করব এবং নতুন প্রজন্মকে দেশ গঠনে আহ্বান জানাব।”
ছাত্রদল সমাবেশের জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন জারি করেছে। ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে; শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে ছয় দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের গাড়ি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না, এবং সংশ্লিষ্ট স্থান পরিষ্কার করে যেতে হবে—এমন নির্দেশনাও রয়েছে।
তিনটি বড় আয়োজনের মধ্যে আরেকটি হলো সাইমুম শিল্পগোষ্ঠীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত চারদিনব্যাপী “৩৬ জুলাই কালচারাল ফেস্ট - জুলাই জাগরণ।” আজ উৎসবের তৃতীয় দিন। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও আলোচনার আয়োজন।
রাজধানীতে তিনটি আলাদা বড় কর্মসূচির কারণে আজ ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থায় কিছুটা চাপ তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আয়োজক সংগঠনগুলো জনদুর্ভোগ কমাতে সতর্ক অবস্থানে থাকবে বলে জানিয়েছে। রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই দিনটি নতুন দিকনির্দেশনা ও ঐক্যমতের ক্ষেত্র তৈরি করতে কতটা সফল হয়, তা এখন সময়ই বলে দেবে।
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...