হজমের ঘড়ি: কী খেলে কতক্ষণ লাগে— জেনে নিন কখন খাওয়া ভালো
গ্রাফিক্স : এআই
আমরা কী খাই তার মতোই কখন খাই—এটিও হজমে বড় প্রভাব ফেলে। পানির মতো তরল দ্রুত পেট ছাড়ে, প্রোটিন–চর্বি বেশি হলে সময় একটু বাড়ে। নিচে সহজ ভাষায় গড়পড়তা সময়গুলো ও খাওয়ার ভালো সময় দিলাম। ব্যক্তিভেদে একটু-আধটু ওঠানামা হবেই—এটা মাথায় রাখুন।
কোন খাবার কত সময়ে হজম হয় (গড় হিসাব) -
পানি:
০–১০ মিনিট; খালি পেটে সকালে ১ গ্লাস ভালো।
জলসমৃদ্ধ ফল (তরমুজ/বাঙ্গি/আঙুর):
২০–৩০ মিনিট; খালি পেটে বা খাবারের মাঝে।
অম্লীয় ফল (কমলা/আনারস/কিউই):
৩০–৪০ মিনিট; সকাল/স্ন্যাক্সে ভালো, ভরপেট খাবারের পরপর নিলে গ্যাস হতে পারে।
আপেল/নাশপাতি/পেঁপে:
৪০–৫০ মিনিট; খালি পেটে বা মাঝখানে।
কাঁচা শাকসবজি:
৩০–৪০ মিনিট; দুপুর/রাতের আগে সালাদ হিসেবে ভাল।
রান্না করা সবজি:
৪০–৫০ মিনিট; দুপুর বা রাতে চলবে।
ভাত/রুটি/আলু:
১.৫–২ ঘণ্টা; দুপুর/রাতে মানানসই।
ডাল/ছোলা/সয়াবিন:
২–৩ ঘণ্টা; দুপুর বা বিকেলে খেলে আরামদায়ক।
দুধ/দই:
৩–৪ ঘণ্টা; সকাল বা রাতে।
সেদ্ধ ডিম:
১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট (ভাজা হলে সময় বাড়ে); সকাল/দুপুরে ভালো।
মাছ:
১ ঘণ্টা; দুপুর/রাতে।
মুরগি:
২–৩ ঘণ্টা; দুপুর/রাতে।
গরু/খাসি মাংস:
৩–৪ ঘণ্টা; দুপুরে রাখা উত্তম।
বাদাম/বীজ:
২–৩ ঘণ্টা; সকাল বা বিকেলের স্ন্যাক্স।
ফাস্টফুড/তেলেভাজা:
৩–৪+ ঘণ্টা; যতটা পারেন কমান।
কখন খেলে আরাম লাগে
সকাল: ঘুম থেকে উঠে পানি → ১৫–২০ মিনিট পর নাশতা। হালকা ফলও চলবে।
দুপুর: মূল ভারী মিল (ভাত/রুটি + ডাল + মাছ/মুরগি + সবজি)। লাল মাংস রাখতে হলে দুপুরেই ভালো।
বিকেল/স্ন্যাক্স: ফল + দই/বাদাম—ভালোভাবে পেট ভরে, তেলেভাজা কমে।
রাত: হালকা খাবার—মাছ/মুরগি + সবজি। ঘুমের অন্তত ২–৩ ঘণ্টা আগে খাওয়া শেষ করুন।
সহজ নিয়ম—মনে রাখুন:
ফল খেলে ভাল লাগে খালি পেটে বা খাবারের কমপক্ষে ১ ঘণ্টা আগে। এসিডিটি থাকলে ফলের সঙ্গে সামান্য দই/বাদাম নিন।
পানি খাওয়ার কড়াকড়ি নিয়ম দরকার নেই—তবে প্রধান খাবারের একদম আগে খুব বেশি পানি না খাওয়াই ভালো; খাবারের প্রায় ৩০ মিনিট পরে ধীরে ধীরে পান করুন।
দুপুরে ভারী, রাতে হালকা—এই সহজ রুটিন বেশিরভাগের জন্যই কাজ করে।
পরিমাণ নিয়ন্ত্রণই আসল—অতিরিক্ত খেলেই বেশি অস্বস্তি হয়।
কারা একটু বেশি সতর্ক হবেন
ডায়াবেটিস, অম্লতা/GERD, আইবিএস, কিডনি/লিভারের সমস্যা, গর্ভাবস্থা বা শিশুদের ক্ষেত্রে খাবার–সময়ের পরিকল্পনা ব্যক্তিগতভাবে ঠিক করুন। দীর্ঘদিন গ্যাস/অজীর্ণতা, পেটব্যথা বা হঠাৎ ওজন কমে গেলে ডাক্তার দেখান।
নিয়মিত সময় মেনে, পরিমিত আর বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার—এই তিনটিই আরামদায়ক হজমের সবচেয়ে সহজ কৌশল।