বিজ্ঞাপন
প্রতিষ্ঠার পর সাড়ে চার দশকের মধ্যে গত দেড় যুগ ধরে সবচেয়ে ভয়াবহ ক্রান্তিকাল পেরিয়ে গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর এক অসামান্য সুবর্ণ সময়ের পটভূমিতে ফিরে এসেছে বিএনপি। মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ে গত সাড়ে ছয় বছর কারারুদ্ধ থাকার পর দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়কে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মুক্তি দিয়েছে। দলের কান্ডারি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় যে গায়েবি-বানোয়াট ও মিথ্যা মামলার পাহাড় ছিল তা ন্যায়বিচারে ক্রমশ খালাস দিচ্ছে আদালত। এখন ফ্যাসিবাদ মুক্ত পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছেন দেশবাসী।
দলের নেতাকর্মীদের নামে গত ১৭ বছরে প্রায় ২ লাখ রাজনৈতিক মামলা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। যাতে আসামি করা হয় অর্ধকোটি নেতাকর্মীকে। আদালত এই মামলাগুলোকে বানোয়াট তথ্যপ্রমাণহীন আখ্যা দিয়ে আসামিদের খালাস দিচ্ছে। ১৭ বছর যারা আওয়ামী লীগের অত্যাচারে ফেরারি ছিলেন তারা ঘরে ফিরতে পারছেন। কারামুক্ত হয়ে আলো-বাতাস দেখতে পারছেন।
৮ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা মামলায় বেগম জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর পর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয় লন্ডনে বসবাসরত তারেক রহমানকে। তিনি দলকে গণতান্ত্রিক পন্থায় পুনর্গঠিত করে সর্বস্তরে শক্তিশালী ও আন্দোলনমুখী করার উদ্যোগ নেন। তার প্রচেষ্টায় দলকে ঢেলে সাজিয়ে বিএনপিকে তৃণমূল শক্তিতে পরিণত করা হয়। বিএনপির পাশাপাশি ১১টি অঙ্গসংগঠনের পুনর্গঠন করে আন্দোলনে-সংগ্রামে রাজপথে সক্রিয় করেন তারেক রহমান। তারেক রহমান প্রতিদিনই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে স্কাইপেসহ ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করে এসেছেন নিরন্তর। দিকনির্দেশনা, আদেশ নির্দেশ দিয়েছেন। গত সাড়ে ছয় বছরে তারেক রহমানের হিরন্ময় নেতৃত্বে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠাসহ শেখ হাসিনার পতনের লক্ষ্যে দুর্বার আন্দোলন হয়েছে। তারেক রহমানের আহ্বানে সর্বশেষ গত ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচন বর্জন করেছেন সারা দেশের মানুষ। সর্বশেষ গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার আন্দোলনের চেতনা, পটভূমি, জনমত তৈরিতে ভূমিকা রেখেছেন তারেক রহমান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তার নির্দেশনায় রাজপথে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদলসহ বিএনপি বড় ভূমিকা রাখে। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলোর শতাধিক নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছেন ছাত্র-জনতার এই অভূতপূর্ব গণ-আন্দোলনে।
এবারে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ৭ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। এ উপলক্ষ্যে গতকাল ৩১ আগষ্ট, রবিবার বেলা ২ টায় রাজধানীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলের জেষ্ঠ্য নেতৃবৃন্দসহ দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবীগণ অংশগ্রহণ করেন। আজ ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টায় ঢাকাসহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। বেলা ১১টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের মাজারে দলের মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় নেতারা পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। সেইসাথে দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র্যালী অনুষ্ঠিত হবে। ২ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হবে। ৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা ও পৌরসভায় আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র্যালী অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ, পোস্টার প্রকাশ, সমসাময়িক বিষয় নিয়ে গোলটেবিল বৈঠকসহ দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৃক্ষ রোপণ অভিযান, মৎস্য অবমুক্তকরণ, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ক্রীড়ানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...