Logo Logo

সমাজে প্রচলিত ১০টি শিরক, যা ধ্বংস করে দেয় ঈমান


Splash Image

বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের সমাজে এখনো নানা ধরনের কুসংস্কার, বিশ্বাস ও আচরণ প্রচলিত আছে, যা ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে শিরক হিসেবে বিবেচিত। আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা ইসলাম ধর্মে সবচেয়ে বড় গুনাহ।


বিজ্ঞাপন


কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করার গুনাহ ক্ষমা করবেন না। তবে তিনি ইচ্ছা করলে অন্যান্য গুনাহ ক্ষমা করবেন। (সুরা নিসা: আয়াত ৪৮)
রাসূল ﷺ বলেছেন:
তোমরা বড় শিরক থেকে বাঁচো, কারণ এটি সবচেয়ে বড় জুলুম। (সহীহ বুখারী)

তবুও সমাজে নানা রূপে শিরক ছড়িয়ে আছে। নিচে ১০টি প্রচলিত উদাহরণ তুলে ধরা হলো:

১। রিকশা/ভ্যানের নিচে পুরোনো জুতা ঝোলানো

বিশ্বাস করা হয়, এতে জ্বিন-শয়তান দূরে থাকবে বা দুর্ঘটনা কাটবে। অথচ কুরআন-হাদিসে এ ধরনের কুসংস্কারের কোনো ভিত্তি নেই।

২। দোকান বা বাসায় কোরআনের আয়াত লিখে টাঙিয়ে রাখা

আয়াত সুরক্ষার জন্য পড়া, মানা ও বিশ্বাস করার বিষয়; দেয়ালে টাঙিয়ে রাখলেই দুর্ঘটনা বা ক্ষতি থেকে বাঁচা যায়—এ বিশ্বাস শিরক।

৩। তাবিজ-কবচ পরে রোগমুক্তি আশা করা

রাসূল ﷺ বলেছেন: “যে তাবিজ ঝুলালো, সে শিরক করল।” (আহমদ, আবু দাউদ)।

৪। ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হবে—এ বিশ্বাস

ঝাড়ফুঁক তখনই বৈধ, যখন কোরআন ও সহীহ দু‘আ দ্বারা হয়। কিন্তু অজানা বাণী, মন্ত্র বা কবিরাজের কেরামতিতে বিশ্বাস করা শিরক।

৫। কবরের কাছে গিয়ে মানত করা

অনেকেই অলির কবরের কাছে গিয়ে মানত করেন বা সেখান থেকে সাহায্য চান। অথচ সাহায্য চাওয়ার একমাত্র অধিকারী আল্লাহ।

৬। গলায় কালো সুতা বা লাল ফিতা বাঁধা

বিশ্বাস করা হয়, এতে অশুভ শক্তি দূরে থাকে। কিন্তু এটি শিরকের অংশ।

৭। গাছের নিচে মোমবাতি জ্বালানো বা খাবার দেওয়া

ধারণা করা হয়, এতে জ্বিন বা অদৃশ্য শক্তি শান্ত হয়। অথচ এটি আল্লাহর ইবাদতের বিকৃতি।

৮। শিশুর কপালে কাজল বা কালো টিপ দেওয়া, যাতে নজর না লাগে

রাসূল ﷺ নজর থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে শিখিয়েছেন, কাজল বা টিপ লাগাতে বলেননি।

৯। পীর সাহেব’ বা ‘ওলি’ ছাড়া দোয়া কবুল হবে না—এমন বিশ্বাস

মহান আল্লাহ নিজেই বলেছেন, “আমার বান্দারা যখন আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, আমি তো নিকটবর্তী। আমি দুআকারীর দুআ কবুল করি।” (সুরা বাকারা: ১৮৬)। তাই কারও মাধ্যম ছাড়া সরাসরি আল্লাহর কাছে দোয়া করা যায়।

১০। কোনো নির্দিষ্ট দিনে গোসল করলে সব পাপ মাফ হবে

এ ধরনের বিশ্বাসের কোনো ইসলামি ভিত্তি নেই। পাপ মাফ হয় তওবা ও আমল দ্বারা, বিশেষ কোনো কুসংস্কার দ্বারা নয়।

ইসলামে শিরক হলো সবচেয়ে বড় গুনাহ। সমাজে প্রচলিত এসব কুসংস্কার কেবল ধর্মীয় চেতনা দুর্বল করছে না; বরং মানুষকে আল্লাহর একত্ববাদ থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। আলেমরা বলছেন, কুরআন-হাদিসের সঠিক শিক্ষা প্রচার এবং পরিবার-সমাজকে ধর্মীয় জ্ঞানে সমৃদ্ধ করলেই শিরক থেকে বাঁচা সম্ভব।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...