বিশ্বজুড়ে মজলুম মুসলমানদের জন্য কোরআনের দোয়া, সহায়তার আহ্বান ও করণীয়। ছবি: সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
বিশ্বের সব মুসলিম এক দেহের মতো—দেহের কোনো অংশে আঘাত এলে যেমন পুরো শরীর ব্যথা অনুভব করে, ঠিক তেমনি কোথাও কোনো মুসলমান নির্যাতনের শিকার হলে অন্য মুসলিমদের হৃদয়েও তার বেদনা স্পর্শ করে। তাই বিপদগ্রস্ত ও মজলুম মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো, সম্ভব হলে সহায়তা করা এবং অন্তত তাদের জন্য দোয়া করা প্রতিটি মুমিনের দায়িত্ব। হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন, যে তার বান্দাদের প্রতি দয়া করে।’ (বুখারি, হাদিস: ১৭৩২) এই শিক্ষার আলোকে নির্যাতিত মুসলিমদের জন্য দোয়া করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি আমল।
কোরআনে মুমিনদের জন্য বিশেষ দোয়া শেখানো হয়েছে, যা নিজেদের ও ঈমানে অগ্রবর্তী ভাই-বোনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার পাশাপাশি পারস্পরিক বিদ্বেষমুক্ত হৃদয় গঠনে সহায়তা করে। দোয়াটি হলো—
رَبَّنَا اغۡفِرۡ لَنَا وَلِإِخۡوَانِنَا ٱلَّذِينَ سَبَقُونَا بِٱلۡإِيمَانِ وَلَا تَجۡعَلۡ فِي قُلُوبِنَا غِلّٗا لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ رَبَّنَآ إِنَّكَ رَءُوفٞ رَّحِيمٞ
বাংলা অর্থ: “হে আমাদের রব! আমাদের এবং ঈমানে অগ্রবর্তী আমাদের ভাইদের ক্ষমা করুন। আর মুমিনদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে বিদ্বেষ রাখবেন না। হে আমাদের রব! আপনি তো দয়ালু, পরম দয়ালু।” (সূরা হাশর, আয়াত: ১০)
এ ছাড়া মজলুমদের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য ও রক্ষাপ্রার্থনা করে দোয়া করার শিক্ষাও কোরআনে এসেছে। নূহ (আ.)-এর দোয়া থেকে নেওয়া আয়াতসমূহ—
رَّبِّ لَا تَذَرۡ عَلَى ٱلۡأَرۡضِ مِنَ ٱلۡكَٰفِرِينَ دَيَّارًا إِنَّكَ إِن تَذَرۡهُمۡ يُضِلُّواْ عِبَادَكَ وَلَا يَلِدُوٓاْ إِلَّا فَاجِرٗا كَفَّارٗا رَّبِّ ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيۡتِيَ مُؤۡمِنٗا وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۖ وَلَا تَزِدِ ٱلظَّـٰلِمِينَ إِلَّا تَبَارًا
বাংলা অর্থ: “হে প্রতিপালক! পৃথিবীতে কোনো কাফিরকে ছেড়ে দেবেন না। যদি তাদেরকে ছেড়ে দেন, তাহলে তারা আপনার বান্দাদের বিপথে নিয়ে যাবে এবং শুধু পাপাচারী কাফির জন্ম দিতে থাকবে। হে আমার রব! আমাকে, আমার পিতামাতাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে, এবং মুমিন পুরুষ-মহিলা সবাইকে ক্ষমা করে দিন। আর জালিমদের জন্য আপনি ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করবেন না।” (সূরা নূহ, আয়াত: ২৬–২৮)
ইসলামের দৃষ্টিতে দোয়ার পাশাপাশি সামর্থ্য অনুযায়ী বাস্তব সহায়তা করাও গুরুত্বপূর্ণ—মানবিক উদ্যোগ, চিকিৎসা-খাদ্য সহায়তা, আইনগত সহায়তা বা সচেতনতা গড়ে তোলা—যা কিছু সম্ভব, তা করা উচিত। তবে প্রতিরোধের সক্ষমতা না থাকলে অন্তত আন্তরিক দোয়া, তওবা-ইসতিগফার এবং নিজ নিজ অবস্থান থেকে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার চেষ্টা অব্যাহত রাখা মুমিনের করণীয়। পাঠকরা ঘরে-বাইরে এসব দোয়াগুলো মুখস্থ করে, নামাজের সিজদা ও দু’হাতে তুলে বিশেষ করে রাতের শেষ প্রহর, ফরজ নামাজের পর এবং কষ্টের সময়ে বেশি বেশি পড়তে পারেন।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...