Logo Logo

আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচনে আমি অংশ নেবো না : কাদের সিদ্দিকী


Splash Image

ইউনিয়ন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম ঘোষণা করেছেন, যে তিনি জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত না হলে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না।


বিজ্ঞাপন


সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বহেড়াতৈল গণউচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জনসভায় তিনি বলেন, “আমরা জনগণের অধিকার চাই, ভোটাধিকার চাই। যদি আওয়ামী লীগের ভোটাররা ভোট দিতে না পারে, আমি গামছা (আমাদের প্রতীক) নিয়ে নির্বাচনে যাব না। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল, তারা যদি ভোট দিতে না পারে, আমি নির্বাচনে যাব না।”

কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, “যখন সবাই পাকিস্তান চেয়েছিল, তখন জামায়াত ব্রিটিশদের দোসর ছিল। আর যখন আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ চাই, তখন জামায়াত পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়ে খুনখারাবি করেছে। সেই জামায়াতকে নিয়ে কেউ যদি নির্বাচন করে, আমি সেই নির্বাচনে অংশ নেব না।”

তিনি জানান, “এখনও হিসাব করলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের ভোট ৪৩ শতাংশ, জাতীয় পার্টির ১৪ শতাংশ, আমাদের তিন শতাংশের মতো। অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের বৈঠকে আমাদের ডাকা হয়নি। এখন ডাকলে যাব কেন?”

সভায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বঙ্গবীর বলেন, “ইউনূস সাহেব, আমি আপনাকে অনেক সম্মান করতাম। শেখ হাসিনা যখন আপনাকে সুদখোর বলেছিলেন, তখন আমি আপনার পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। আমি পাশে না দাঁড়ালে আপনার গ্রামীণ ব্যাংক আজ থাকত না। কিন্তু এখন দেখছি, আপনি বাংলার মানুষকে চেনেন না। এনজিও চালানো আর দেশ চালানো এক নয়। এখনও সময় আছে—সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একটি নিরপেক্ষ ও সন্তোষজনক নির্বাচন আয়োজন করতে পারেন। তাহলে ইতিহাসে আপনার নাম সম্মানের সঙ্গে থাকবে। না হলে, যদি মীরজাফর বা ঘসেটি বেগমের পথ বেছে নেন, তাহলে আপনার পতনও দূরে নয়।”

কাদের সিদ্দিকী আরো বলেন, “আমি শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ করি না। আমি বঙ্গবন্ধু করি, আমি মুক্তিযুদ্ধ করি, আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাই। আমি জয় বাংলা করি। সরকার বাহাদুরকে বলেছি, জয় বাংলা বলা যদি অপরাধ হয়, তাহলে আমাকে প্রথম গ্রেপ্তার করুন। আমি জয় বাংলা বলে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, জয় বাংলা বলেই আমার জীবন দিতে চাই। আমার নেতা বঙ্গবন্ধু, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ আমার ধ্যান, বঙ্গবন্ধু আমার চেতনা, বঙ্গবন্ধু আমার চৈতন্য।”

তিনি শেখ হাসিনার পতন প্রসঙ্গে বলেন, “বিএনপি বা জামায়াত নয়, শেখ হাসিনাকে সরিয়েছে জনগণ। মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল তার অত্যাচারে। আমি বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনার পতন আল্লাহরই বিধান ছিল। তিনি যে পরিমাণ অবিচার করেছেন, তারই প্রতিফলন এটি।”

কাদের সিদ্দিকী আরও উল্লেখ করেন, “গত ১৫-১৬ বছরে শেখ হাসিনা যে পরিমাণ অর্থ আদায় করেছেন বিভিন্ন স্ট্যান্ড থেকে, বর্তমান সময়ে তার চেয়েও বেশি টাকা তোলা হচ্ছে। শেখ হাসিনার পতনের সময় ধানের শীষ ছিল এক নম্বর দল, কিন্তু এখন তাদেরও মানুষের বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছে। যে কারণে মানুষ হাসিনাকে সরিয়েছে, সেই একই পথে হাঁটলে বিএনপিরও একই পরিণতি হবে।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান। এতে বক্তব্য দেন টাঙ্গাইল জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবু সালেক হিটলু, উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেন সজীব, কালিহাতী উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ইথার সিদ্দিকী, বাসাইলের সাবেক মেয়র রাহাত হাসান টিপু, উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা বিল্লাল হোসেন, আব্দুল্লাহ মিয়া, সহসভাপতি সানোয়ার হোসেন মাস্টার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিক জাহাঙ্গীর, আলমগীর সিদ্দিকী, আবু জাহিদ রিপন, দেলোয়ার হোসেন মাস্টার ও আঁখি আতোয়ার প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...