Logo Logo

‘ইচ্ছামতো’ আইন-বিধি সংশোধন করায় ইসির প্রতি ক্ষোভ জোনায়েদ সাকির


Splash Image

ছবি : সংগৃহীত।

সরকার উৎখাতের পর গঠিত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিভিন্ন নির্বাচনী বিধি ও আইন পরিবর্তনের উদ্যোগে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পর্যাপ্ত আলোচনা হয়নি—এ অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক জোনায়েদ সাকি।


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ও জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য ইসিকে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা রাখতে হবে।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি দলের পক্ষ থেকে এই প্রতিবাদ ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

বৈঠকে জোনায়েদ সাকি বলেন, নির্বাচন কমিশন একতরফাভাবে নির্বাচনী বিধিমালা ও আইনে পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যা একটি গণতান্ত্রিক ট্রানজিশনের সময়ে আরও বেশি উদ্বেগের।

তার ভাষায়, “নির্বাচনী বিধি থেকে শুরু করে যেকোনো ধরনের পরিবর্তনের আগে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা উচিত ছিল। এখন দেশ একটি ডেমোক্র্যাটিক ট্রানজিশনের মধ্যে আছে, যেখানে ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য প্রয়োজন। তাই আলোচনা আরও জরুরি।”

তিনি মনে করেন, নির্বাচন ইসির একক দায়িত্ব নয়; বরং এটি সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে সামষ্টিকভাবে সম্পন্ন হওয়া উচিত।

নির্বাচন কমিশনের দীর্ঘসূত্রতা ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে তার দল নিবন্ধন পেতে ভোগান্তির শিকার হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সাকি বলেন, “২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর আমরা নিবন্ধনের জন্য আবেদন করি। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে তা মঞ্জুর হয়নি। কোর্টের নির্দেশও কার্যকর করা হয়নি। উচ্চ আদালতের রায় পাওয়ার পরেও সরকার উৎখাতের আগ পর্যন্ত আমাদের নিবন্ধন দেওয়া হয়নি।”

একটি ভালো নির্বাচনের জন্য আইনি কাঠামোর চেয়ে নির্বাচনকালীন পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন জোনায়েদ সাকি। এ জন্য সরকার ও ইসির উদ্যোগের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘নির্বাচন পরিবেশ মনিটরিং কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব করেন তিনি। তার মতে, এই কমিটি সংঘাত ও অভিযোগ দ্রুত সমাধানে ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করলে এই দেশে সবসময় ভালো নির্বাচন হয়েছে।”

এ পরিস্থিতিতে একটি জবাবদিহিমূলক ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে ‘কনস্টিটিউশনাল কমিশন’ প্রবর্তনের পক্ষে মত দেন তিনি।

প্রচারণার ক্ষেত্রে ছোট ও নতুন দলগুলোকে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ দিতে কয়েকটি বিধির পরিবর্তন জরুরি বলে উল্লেখ করেন সাকি। তার দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—

* প্রতীক বড় আকারে মুদ্রণের বাধ্যবাধকতা

* জোটগত প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ

* গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনের জন্য আলাদা বুথ ও গণনা পদ্ধতি

* কেন্দ্রভিত্তিক পুলিশ, আনসার ও সেনা ব্যাকআপ সদস্যের সংখ্যা জনসমক্ষে প্রকাশ

* প্রচারণার আর্থিক লেনদেন হিসেবে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি এমএফএস হিসাব জমা

* ইউনিয়ন/ওয়ার্ড প্রতি পোস্টার/ফেস্টুনের সীমা পুনর্বিবেচনা

* প্রতিটি ইউনিয়ন/ওয়ার্ডে কমপক্ষে একটি মাইক ব্যবহারের সুযোগ

* পোস্টার/বিলবোর্ড ব্যবহারের নিয়ম সংশোধন

* নির্দিষ্ট স্থানে পোস্টার লাগানোর জন্য ইসির স্থান নির্ধারণ ও দলভিত্তিক বরাদ্দ

তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান কিছু বিধান বাস্তবসম্মত নয় এবং তা ছোট দলগুলোর জন্য অসম প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি করে।

জোনায়েদ সাকি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান, চলমান রাজনৈতিক পরিবেশে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করতে এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনি ব্যবস্থা গড়তে যেন সকল পক্ষের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...