বিজ্ঞাপন
গতকাল শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ৭ টায় চট্টগ্রাম নগরের জিইসি কনভেনশন হলে জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আয়োজিত ‘নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলন’-এ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শাহজাহান চৌধুরী এ কথাগুলো বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তবে শাহজাহান চৌধুরীর এই বক্তব্যের সময় তিনি মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন না।
নির্বাচনে সম্ভাব্য নাশকতা, টাকা-অস্ত্রের লেনদেন এবং প্রশাসনের রাজনৈতিক প্রভাব-এসব বাস্তবতা তুলে ধরে তিনি প্রার্থীদের এলাকাভিত্তিক সন্ত্রাস মোকাবেলায় প্রস্তুতির কথা বলেছেন। এটুকু বাদ দিয়ে খণ্ডিত ভিডিও ছড়িয়ে তাকে বিতর্কিত করা উদ্দেশ্যমূলক। সমালোচনা হতে পারে-কিন্তু বিকৃত তথ্য প্রচার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
পুরা ১৮ মিনিটের বক্তব্য- তিনি খুব সাবলীলভাবে অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদের ভূমিকায় কথা বলেছেন, পরামর্শ দিয়েছেন। প্রত্যেকটি পরামর্শ সময়োপযোগী ছিল।
বক্তৃতার এক জায়গায়- নির্বাচনে ভারত ও আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে, নির্বাচন বানচালে কোটি কোটি টাকা এবং অবৈধ অস্ত্রের লেনদেনের প্রবল সম্ভাবনার কথা বলেন। সেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় নির্বাচনের প্রার্থীদের কাছে যাতে নিজস্ব এলাকার সন্ত্রাসীদের মোকাবেলায় প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগ করার মতো ক্যাপাসিটি থাকে, সেই বিষয়টা তিনি মিন করেন (এটা তো বাস্তব, বর্তমান প্রশাসনের অধিকাংশই এখনো আওয়ামী আমলের)।
তিনি আরও বলেন, আমি আমার দক্ষিণ জেলায় অনেককে সহযোগিতা করেছি। তখন ক্যান্ডিডেট হিসেবে আমার নামও ঘোষণা করা হয়নি। উপদেষ্টাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, লোহাগাড়ায় ১০০ কোটি, সাতকানিয়ায় ১০০ কোটি এবং বাস্তবায়ন করার জন্য লোহাগাড়ায় ১০ কোটি, সাতকানিয়ায় ১০ কোটি (দেওয়া হয়েছে)। জনগণের অভাব, অভিযোগ, চাহিদা বুঝতে হবে। আমার এলাকায় ডেকোরেশনের বয়দের নিয়ে সম্মেলন হয়েছে। অনেক এলাকায় হয়নি। আমরা তো তাদের ভোটারই মনে করছি না। সবাইকে নিয়ে সম্মেলন করতে হবে।
চট্টগ্রামের এই শীর্ষ জামায়াত নেতা বলেন, আমাকে মাফ করবেন, নির্বাচন সংগঠন নয়। সংগঠন অবশ্যই লাগবে। সংগঠন আমাদের মৌলিক ভিত্তি। সংগঠনই আমাদের একমাত্র ধারক এবং বাহক। কিন্তু জনগণকে যদি জায়গা দিতে না পারেন, তাহলে নির্বাচনে বিজয় হওয়া কঠিন। যেমন বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার শুধু আওয়ামী লীগের লোক নিয়ে দেশ শাসন করতে চেয়েছে। জনগণকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। তাই জনতার আন্দোলনের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতারা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
আর সেই বক্তব্যসহ বাদ দিয়ে খন্ডিত ২০ সেকেন্ডের একটা ভিডিও প্রচার করে যারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করবে, তারা তো করবেই। ওনার পুরা বক্তব্যটা প্রচার না করে উল্টো অন্যদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেছে?
উনার বক্তব্য একটু আগে থেকে শুনুন। উনি ভারতীয় আধিপত্য বাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য সবাইকে উদ্ধুদ্ধ করেছেন। আমরা বলতে একবার ও জামায়াতে ইসলামীর কথা বলেননি।তিনি আপামর জনতার কথা বলেছেন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কঠোর বার্তা দিয়েছেন।
ওনার বক্তব্যের ধরণ এবং শব্দচয়নের সমালোচনা করছি,করতে পারেন। কিন্তু এভাবে কাটছাট বক্তব্য প্রচার করে বিতর্কিত করা তো সমীচীন নয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা চাঁদাবাজমুক্ত দেশ গড়তে চাই, আমরা অতীতেও চাঁদাবাজি করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। আমরা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ চাই। আমাদের অনেক রাজনৈতিক দল এ কথা জোরালোভাবে বলতেও পারে না। কারণ, বলতে গেলে তাদেরও হাসি আসবে, জনগণও হাসবে।’
অনুষ্ঠানে জামায়াতের ইসলামীর চট্টগ্রাম নগরের আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আহসানুল্লাহ, চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য মুহাম্মদ জাফর সাদেক, মোস্তাফিজুর রহমান, আমিরুজ্জামান, নুরুল আমিন চৌধুরী; চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আমির আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, উত্তর জেলা আমির আলা উদ্দিন সিকদার প্রমুখ।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...