Logo Logo

নামাজের ইমাম সমাজের ইমাম হলে তবেই মিলবে সত্যিকারের মুক্তি : ডা. শফিকুর রহমান


Splash Image

রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সম্মিলিত ইমাম-খতিব জাতীয় সম্মেলনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “যেদিন নামাজের ইমাম সমাজের ইমাম হবেন, সেইদিন সত্যিকারের মুক্তি মিলবে।” সমাজের ফায়সালা মসজিদের মিম্বর থেকে হবে— এমন স্বপ্নের কথাও ব্যক্ত করেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ২টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র ইমাম মাওলানা মুহিব্বুল্লাহিল বাকি আন নদভীর সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সম্মেলনে জামায়াত আমির বলেন, ইমাম ও খতিবদের কারও করুণার পাত্র হিসেবে দেখতে চান না তিনি। তাদের প্রকৃত মর্যাদা তাদের হাতেই ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।

ইমাম-খতিবদের প্রতি গভীর সম্মান প্রকাশ করে তিনি বলেন, জীবিত অবস্থায় মুসল্লিরা তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, আর মৃত্যুর পরও তারা ইমাম— শুধু অবস্থান বদলায়। এই সম্পর্ক শুধু আনুষ্ঠানিক নয়, বরং কলিজার ভেতর থেকে সম্মান করার বিষয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর যুগের মসজিদকেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থার প্রসঙ্গ টেনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, তখন রাষ্ট্র পরিচালনার সব সিদ্ধান্তই হতো মসজিদে নববী থেকে। সেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই পরামর্শে অংশ নিতেন। আল্লাহ তায়ালা সেই সমাজকে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ সমাজ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, নবীজির আদর্শ বাদ দিয়ে মনগড়া মতবাদ দিয়ে গঠিত কোনো সমাজ বিশ্বে শান্তি ও সম্মান দিতে পারবে না— এটি প্রমাণিত সত্য।

বাংলাদেশে কোরআনের আইন চালুর পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, এদেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান এবং তারা আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি বিশ্বাসী। তাই এই দেশে আইন চলবে কোরআনের মতবাদেই— ইনশাআল্লাহ। এ পর্যায়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোরআন শুধু মানুষের নয়, সমস্ত মাখলুকাতের অধিকারের গ্যারান্টি দিয়েছে। ইসলামী সমাজব্যবস্থায় সব ধর্মের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত থাকবে।

ইমাম-খতিবদের সাত দফা দাবির একটি বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে তিনি বলেন, মসজিদ কমিটি ইমাম-খতিবদের একমোডেট করবে— এ দাবি ঠিক নয়। বরং কমিটি গঠিত হবে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী এবং ইমাম-খতিব হবেন সেই কমিটির প্রাণপুরুষ।

ইমাম-খতিবদের সম্মান রক্ষার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি পছন্দ না হলে নামাজের মধ্যেই অপমানজনক সিদ্ধান্ত দেওয়া যাবে না। সম্মানজনকভাবে ভুল সংশোধন করতে হবে। অন্যথায় তা বরদাস্ত করা হবে না।

তিনি আরও বলেন, ইমাম-খতিবদের দাবিগুলো ছোট হলেও তাদের দায়িত্ব সমাজ পরিবর্তনের বড় দায়িত্ব। যখন তারা সমাজের নেতৃত্বে আসবেন, তখনই আল্লাহর রহমতে সত্যিকারের মুক্তি আসবে।

সম্মেলনে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অধিকার সংরক্ষণ, ইমাম-খতিবদের সামাজিক নিরাপত্তা, সম্মানজনক ভাতা এবং মসজিদ পরিচালনায় আধুনিক নীতিমালা প্রণয়নের দাবি সম্বলিত একটি সুস্পষ্ট জাতীয় রোডম্যাপ উপস্থাপন করা হয়।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...