বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান, পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক শামসুল হক জবা, সদস্য সচিব আব্দুল জলিলসহ জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দ।
১৯৭১ সালের এই দিনে ১৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় নীলফামারী জেলা শহর। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৬ নম্বর সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধারা সম্মিলিত আক্রমণের মাধ্যমে নীলফামারীকে শত্রুমুক্ত করেন এবং শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে অগ্রসর হয়ে পাক হানাদার বাহিনী নীলফামারী দখল করে নেয়। দখলের পরপরই জেলার বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে হানাদার বাহিনীর তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়। চারদিক থেকে প্রতিরোধ ও আক্রমণের মুখে একপর্যায়ে পাক বাহিনী দিশেহারা হয়ে পড়ে।
নীলফামারী জেলা শহরকে মুক্ত করতে ১২ ডিসেম্বর রাত থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে সশস্ত্র স্থলযুদ্ধে অংশ নেন। প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে পাক সেনারা পিছু হটে সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নেয়। পরদিন ১৩ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করে নীলফামারীকে সম্পূর্ণ হানাদারমুক্ত করেন।
শত্রুমুক্তির খবরে মুক্তিকামী মানুষ আনন্দে রাস্তায় নেমে আসে এবং চৌরঙ্গী মোড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বিজয়ের উল্লাস প্রকাশ করে। বর্তমানে চৌরঙ্গী মোড়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ‘স্মৃতি অম্লান’ নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে, যা নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেয়।
টানা নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে নীলফামারীতে শহীদ হন ক্যাপ্টেন বাশার, আলী হোসেন, আহমেদুল হক প্রধান, আনজারুল হক ধীরাজ, জাহেরুল ইসলাম, মোজাম্মেল হক, মিজানুর রহমান, মির্জা হাবিবুর রহমান বেগসহ মোট ১৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
অবস্থা বেগতিক দেখে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও রসদ ফেলে ১৩ ডিসেম্বর ভোরে পাক সেনারা নীলফামারী ছেড়ে রংপুর সেনা ক্যাম্পে পালিয়ে যায়। এর মধ্য দিয়েই চূড়ান্তভাবে শত্রুমুক্ত হয় নীলফামারী জেলা শহর।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...