বিজ্ঞাপন
নতুন অর্থবছরের বাজেটে যেমন কিছু পণ্যে শুল্ক ও ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে, তেমনই বেশকিছু খাতে কর ছাড়েরও প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এতে একদিকে বাড়তে পারে দৈনন্দিন জীবনযাপনের ব্যয়, অন্যদিকে কিছু ক্ষেত্রে মিলতে পারে স্বস্তিও।
যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে
প্লাস্টিকজাত হোম ও কিচেন ওয়্যারের ওপর ভ্যাট দ্বিগুণ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে। এটি বাস্তবায়িত হলে সাধারণ গৃহস্থালী পণ্যের দাম বাড়বে। বিলাসবহুল পরিবহন ব্যবস্থায় হেলিকপ্টার আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করার প্রস্তাব এসেছে, যার ফলে হেলিকপ্টার সেবার ভাড়াও বেড়ে যাবে।
বিয়ের অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনে ব্যবহৃত কনভেনশন হল ও কনফারেন্স সেন্টারের সেবার ওপর উৎসে কর ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বাড়ছে রেফ্রিজারেটর, এসি, মোবাইল ফোনের উপকরণ, এলপিজি সিলিন্ডার, সিমেন্টশিট, লিফট, এবং নির্মাণ সেবার ওপর ভ্যাট। ফলে নির্মাণ খাতসহ মধ্যবিত্তের প্রয়োজনীয় পণ্যে বাড়তি ব্যয় চাপতে পারে।
একাধিক গাড়ির ক্ষেত্রে পরিবেশ সারচার্জ সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হতে পারে। পাশাপাশি ফোর-স্ট্রোক থ্রি-হুইলার, কটন সুতা ও কৃত্রিম আঁশের মিশ্রণযুক্ত ইয়ার্নের ওপরেও ভ্যাট বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে
প্রস্তাবিত বাজেটে ভোক্তাদের জন্য কিছু স্বস্তির খবরও রয়েছে। স্থানীয় ঋণপত্রের উৎসে কর কমিয়ে ০.৫ শতাংশ করার ফলে চাল, ডাল, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমতে পারে।
যাত্রীসেবার মান বাড়াতে ১৬ থেকে ৪০ আসনের বাস আমদানিতে শুল্ক ১০ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব রয়েছে, যা বাসের দাম কমিয়ে পরিবহন খাতে স্বস্তি আনবে। পরিবেশবান্ধব পণ্য যেমন মাটির ও সুপারির খোলের তৈজসপত্রের ওপর ভ্যাট অব্যাহতি আসতে পারে।
কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ, ফলমূল ক্রয়ে উৎসে কর কমানোর পাশাপাশি এলএনজি আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যা বিদ্যুৎ ও শিল্প খাতে খরচ কমাবে।
কর ছাড় ও রিটার্নের নিয়মে পরিবর্তন
স্যানিটারি ন্যাপকিন, তরল দুধ, পলিপ্রোপাইলিন স্ট্যাপল ফাইবারের ওপর ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব এই বাজেটে যুক্ত হতে পারে। ই-বাইক ও এসি-ফ্রিজ কম্প্রেসার উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণেও করছাড়ের চিন্তা রয়েছে।
এছাড়া নির্দিষ্ট কিছু সেবায় রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়ার প্রস্তাবও রাখা হয়েছে, যাতে ১২ ধরনের সেবার জন্য শুধুমাত্র টিআইএন নম্বর থাকলেই চলবে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই বাজেটে একদিকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে, অন্যদিকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতে করছাড়ের মাধ্যমে স্বস্তির বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।