বিজ্ঞাপন
উত্তরাঞ্চলের তাবুক প্রদেশের জাবাল আল-লাওজ পাহাড়ে অবস্থিত পর্যটন এলাকা ট্রোজেনা তুষারাবৃত হয়। প্রায় ২ হাজার ৬০০ মিটার উচ্চতার এই পাহাড়ি গন্তব্যে তুষারপাতের পাশাপাশি হালকা বৃষ্টিও হয়েছে। তাবুক ছাড়াও হাইল প্রদেশের হাইল শহরের আশপাশের পাহাড়ি এলাকায় বুধবার সন্ধ্যায় তুষারপাত দেখা গেছে। এসব এলাকার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয়েছে।
রাজধানী রিয়াদেও বৃহস্পতিবার ভোর থেকে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। সারাদিন আকাশ ঢাকা থাকে ঘন মেঘে। টানা বৈরী আবহাওয়ার কারণে রিয়াদের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাময়িকভাবে অনলাইন ক্লাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কাসিম অঞ্চলের বুরাইদাহ শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হয়। এছাড়া আল-উলা, শাকরা, বির বিন হারমাস, আল-আইনাহ ও আম্মার এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
সৌদি আরবের জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র (এনসিএম) জানায়, রিয়াদের উত্তরাঞ্চলের আল-মাজমা’আ ও আল-ঘাত গভর্নরেটেও বৃহস্পতিবার সকালে তুষারপাত হয়। উঁচু ভূমি ও খোলা এলাকায় বরফ জমে থাকতে দেখা গেছে।
এনসিএমের মুখপাত্র হুসেইন আল-কাহতানি বলেন, “উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে এই পরিস্থিতির মূল কারণ হলো উত্তর দিক থেকে ধেয়ে আসা একটি তীব্র শীতল বায়ুস্তর, যার সঙ্গে ছিল বৃষ্টিবাহী মেঘ। ফলে কিছু এলাকায় তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যায় এবং ভোরের দিকে তুষারপাতের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।” তিনি আরও জানান, আগেই এ ধরনের আবহাওয়ার বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল এবং বিশেষায়িত দলগুলো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও আল-মাজমা’আ ও আল-ঘাত এলাকায় তুষারপাত দেখতে ভিড় করেন স্থানীয়রা। রিয়াদের বাসিন্দা থামর আল-ওতাইবি বলেন, “এটা আমাদের জন্য একেবারেই অভূতপূর্ব। তাই বন্ধুবান্ধব নিয়ে শীতের বিস্ময় নিজের চোখে দেখতে এসেছি।” আরেক বাসিন্দা আবদুল হাম্মেদ বলেন, পরিবারের একটি আউটডোর আয়োজন বাতিল করে ঘরে থাকার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, পূর্বাঞ্চল, রিয়াদ ও কাসিমে দমকা হাওয়া, মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি এবং কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর সীমান্ত অঞ্চল, জৌফ ও হাইল এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। কিছু এলাকায় কুয়াশা দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শীত আরও তীব্র হবে। লোহিত সাগরে ঘণ্টায় ২৫–৫০ কিলোমিটার এবং আরব উপসাগরে ২৫–৬০ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
সৌদির সিভিল ডিফেন্স বিভাগও বৈরী আবহাওয়ার কারণে সতর্কতা জারি করেছে। বিশেষ করে পাহাড়ি উপত্যকা ও নিম্নাঞ্চলে যাতায়াত এড়িয়ে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। আবহাওয়াবিদদের মতে, পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবেই সৌদি আরবের মতো মরুভূমিপ্রধান দেশে এই বিরল তুষারপাত ও ভারী বৃষ্টির ঘটনা ঘটেছে, যা অঞ্চলটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে অত্যন্ত ব্যতিক্রমী।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...