Logo Logo

পাট চাষে বাম্পার ফলন, সোনালি আঁশ ছাড়াতে ব্যস্ত কৃষকরা


Splash Image

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় সোনালি আঁশ পাট চাষে কৃষকের সুদিন ফিরেছে। শস্যভাণ্ডারখ্যাত চলনবিলে চলতি পাট মৌসুমে বিভিন্ন এলাকায় পাট কাটা, জাগ দেওয়া এবং পাটকাঠি থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা।


বিজ্ঞাপন


অন্য বছরের তুলনায় এবার পাটের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি বাজারদর ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

চলনবিলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বর্ষা ও ভারী বৃষ্টির কারণে জলাশয়গুলোতে পানি জমেছে। সেই পানিতেই চাষিরা পাট কেটে নদী, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দিচ্ছেন, আঁশ ছাড়াচ্ছেন এবং তা হাটে-বাজারে বিক্রি করছেন। কোথাও কোথাও নারী-পুরুষ একসঙ্গে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ করছেন।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৭০০ হেক্টরের বেশি জমিতে তোষা, মেস্তা ও কেনাফ জাতের পাটের চাষ করেছেন কৃষকরা। এর মধ্যে মেস্তা জাতের পাটের চাষ বেশি হয়েছে। পাট ছাড়াও পাটকাঠি বিক্রি করে কৃষকেরা অতিরিক্ত আয় করছেন।

উপজেলার হামকুড়িয়া গ্রামের পাটচাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, তিনি এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। এক বিঘা জমিতে পাট চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা। প্রতিটি বিঘায় উৎপাদন হয়েছে ৮-১০ মণ, যার বাজারমূল্য প্রায় ২৮ হাজার টাকা। এছাড়া বিঘাপ্রতি ২ হাজার টাকার মতো পাটকাঠিও বিক্রি করতে পারছেন। গত বছর প্রতিমণ পাট ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হলেও এ বছর ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ধাপে ধাপে দাম বাড়ছে।

শ্যামপুর গ্রামের আরেক কৃষক লুৎফর রহমান জানান, তিনি চার বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। জমির পাটকাঠি শুকিয়ে পরিষ্কারভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে তা বিক্রি করে ১৫-২০ হাজার টাকা বাড়তি আয় হবে বলে আশা করছেন।

তিনি আরও বলেন, পাটকাঠি সরাসরি চারকোল বোর্ড ফ্যাক্টরিতে দিতে পারলে আরও লাভ হতো। এবার পাটের দাম ভালো, পাশাপাশি প্রতি আঁটি (হাতা) পাটকাঠি ৪ থেকে ৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ১০০ আঁটি পাটকাঠি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। এতে কৃষকেরা জ্বালানির চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি অর্থ উপার্জন করতে পারছেন।

তাড়াশের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃষকের বাড়ি থেকে পাটকাঠি কিনে শহরে নিয়ে যাচ্ছেন। এসব পাটকাঠির পাবনার বেড়া, সাথিয়া ও আতাইকুলা উপজেলায় চাহিদা বেশি।

এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “উপজেলায় পাট উৎপাদনে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে। পাট দিয়ে পলিব্যাগের বিকল্প ব্যাগ তৈরির কাজও দেশে শুরু হয়েছে। এবার পাটের দাম ভালো। বাম্পার ফলন ও দাম পাওয়ায় আগামীতে কৃষকেরা আরও বেশি পাট চাষে আগ্রহী হবেন।

-মোঃ ফরহাদ হোসেন, তাড়াশ

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...