বিজ্ঞাপন
বর্ষাকালের দুর্ভোগের মধ্যে যখন মানুষ ঘর থেকে বের হওয়ারও সময় পান না, ঠিক সেই সময় গ্রামে গ্রামে গিয়ে এই ব্যক্তি বিভিন্নভাবে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের অর্থ।
কখনো নিজেকে বরিশাল বিভাগীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি, কখনো একাধিক জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদক বলে দাবি করেন। তার কাছে থাকে ওয়াকি-টকি, ভুয়া পরিচয়পত্র, নামজুড়ানো ভিজিটিং কার্ড—যেগুলোর সবখানে বানানো পদ-পদবি আর সংগঠনের ছড়াছড়ি।
গ্রামের সহজ-সরল মানুষদের কাছে তিনি বলেন, “আমি আপনার এলাকার সাংবাদিক, আমাকে তো চিনেন!”—এই পরিচয়ে কখনো ‘সাহায্য’, কখনো ‘ডোনেশন’, কখনোবা ‘ভিজিট ফি’ নামে অর্থ দাবি করেন। অনেক সময় নগদ না পেলে বিকাশ নম্বরে টাকা নিতে বলেন, তারপর নিয়মিত ফোন করে চাপ প্রয়োগ করে বাকি টাকা আদায় করেন। তার হুমকি আরও ভয়ংকর—দুদক বা মন্ত্রণালয়ের নাম জড়িয়ে বলেন, “আপনার বিরুদ্ধে রিপোর্ট হবে, মান-সম্মান শেষ হয়ে যাবে।” অথচ বরিশালের কোনো গণ্যমান্য সাংবাদিক বা সংবাদমাধ্যমের রেকর্ডে এমন কেউকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সাংবাদিকদের দাবি—শাহ আলম শাহ নামে কোনো রিপোর্টারকে তাঁরা কখনো কোনো সংবাদ কাভার করতে দেখেননি, এমনকি তিনি কোনো প্রেসক্লাবের বৈধ সদস্যও নন।
এই চক্রের বিস্তার এতটাই নিচে নেমেছে যে, এখন মাদ্রাসা ও হেফজখানার ধর্মভীরু শিক্ষকদের কাছ থেকেও টাকা আদায়ের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। গ্রামের চানাচুর কারখানা, ছোট ব্যবসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান—সবই তাদের টার্গেট।
এসব প্রতারণায় আদায়কৃত অর্থ পরে তার সঙ্গীদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়া হয়। এই ভুয়া সাংবাদিকতা ও চাঁদাবাজি প্রতিরোধে বরিশালের প্রতিটি উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং প্রকৃত গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানানো হচ্ছে—এই প্রতারক চক্রকে এখনই চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সাধারণ মানুষ যেন সাংবাদিক নামধারী কোনো প্রতারকের ফাঁদে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
-জাহিদুল ইসলাম, বরিশাল প্রতিনিধি