বিজ্ঞাপন
প্রশ্ন:
যাকাতের হুকুম কী? নেসাব কত? এবং কার ওপর যাকাত ফরজ?
উত্তর:
بسم الله الرحمن الرحيم
الحمد لله وحده والصلاة والسلام على من لا نبي بعده أما بعد:
যাকাতের হুকুম:
যাকাত ইসলামের অন্যতম ফরজ বিধান এবং পাঁচটি মূল রুকনের একটি। আল্লাহ তাআলা কোরআনে ইরশাদ করেছেন—
وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ
“তোমরা সালাত কায়েম কর এবং যাকাত আদায় কর।” (সূরা বাকারা: ৪৩)
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—
بني الإسلام على خمس... وإيتاء الزكاة
“ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত—শাহাদাত, সালাত, যাকাত, হজ্ব এবং রমজানের রোজা।” (সহিহ বুখারি, হাদিস ৮)
যাকাতের বাধ্যবাধকতা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, এর অস্বীকারকারী ইসলামের বাইরে চলে যায়। হযরত আবু বকর রা. যেসব মুসলমান যাকাত দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। (সহিহ বুখারি: ১৩৩৫)
যাকাতের নেসাব কত?
রূপার নেসাব: সাড়ে ৫২ ভরি (প্রায় ৬১২ গ্রাম) রূপা বা এর সমমূল্যের সম্পদ।
সোনার নেসাব: সাড়ে ৭ ভরি (প্রায় ৮৭.৪৮ গ্রাম) স্বর্ণ, যদি শুধু স্বর্ণ থাকে এবং অন্য কোনো যাকাতযোগ্য সম্পদ না থাকে।
কার ওপর যাকাত ফরজ?
যার কাছে—
✔ ঋণ ও মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে ৫২ ভরি রূপা বা এর সমমূল্যের সম্পদ (যেমন নগদ অর্থ, ব্যবসার পণ্য) রয়েছে
✔ এবং এই সম্পদের মালিক হওয়ার পর চান্দ্রবর্ষ হিসেবে এক বছর পূর্ণ হয়েছে
তার ওপর যাকাত ফরজ।
উদাহরণ:
কেউ ১৪৪০ হিজরি রমজান মাসের ১১ তারিখ নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেন। তাহলে পরবর্তী বছরের ১০ রমজান তার যাকাতবর্ষ পূর্ণ হবে। এই দিনে তার হাতে থাকা সমস্ত যাকাতযোগ্য সম্পদের হিসাব করে ২.৫% (৪০ টাকায় ১ টাকা) হারে যাকাত দিতে হবে। বছরের মধ্যে কখনো সম্পদ কমে গেলে তাতে সমস্যা নেই, শর্ত হলো যাকাতবর্ষ পূর্তির দিনে নেসাব থাকতে হবে।
তথ্যসূত্র:
সহীহ বুখারি (হাদিস ১৩৩৪), আদ্দুররুল মুখতার (২/২৫৯-২৯৬), ফাতাওয়া হিন্দিয়া (১/১৭০), বাদায়েউস সানায়ে (২/২০), মাবসূত (২/১৪৯-১৫০)।
উপসংহার:
যাকাত ইসলামের আবশ্যকীয় ফরজ ইবাদত। নেসাব পূর্ণ হলে এবং এক বছর অতিক্রান্ত হলে যাকাত আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব।
উত্তর প্রদানকারী:
আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)