Logo Logo

রাব্বীর গ্রেপ্তার-স্ত্রীর মৃত্যু: ঢাকা পোস্ট যেখানে চুপ

ঢাকা পোস্টের অপ্রকাশিত সত্য তুলে ধরলেন জুলকারনাইন!


Splash Image

ছবি- জুলকারনাইন, ঢাকা পোস্ট, (সংগৃহীত)


বিজ্ঞাপন


চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শাহ পরান আলম রাব্বীর গ্রেপ্তার এবং তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। প্রথমে ঢাকা পোস্ট একটি সংবাদ প্রকাশ করে, যেখানে রাব্বীর গ্রেপ্তারের তথ্য থাকলেও তার স্ত্রীর মৃত্যুর পেছনের মানবিক বাস্তবতা তুলে ধরা হয়নি। কিন্তু সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার ফেসবুক পোস্টে এমন কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন, যা এই ঘটনার প্রেক্ষাপট বদলে দিয়েছে এবং সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।

জানা যায়, ১৯ জুলাই রাত ১টার দিকে রাব্বীকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তখন তার স্ত্রী ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন এবং ২২ জুলাই ছিল তার সন্তান প্রসবের নির্ধারিত তারিখ। রাব্বীকে গ্রেপ্তারের সময় তার স্ত্রী পুলিশের কাছে বারবার অনুরোধ করেছিলেন, যেন তার স্বামীকে অন্তত তখন না নেওয়া হয়। তিনি জানান, তিনি যে কোনো মুহূর্তে সন্তান প্রসব করতে পারেন এবং মানসিকভাবে একা এমন পরিস্থিতি সামলানো তার পক্ষে সম্ভব নয়। এ সময় বাসায় তাদের আড়াই বছর বয়সী আরেকটি ছোট সন্তানও ছিল।

তবুও পুলিশ তার অনুরোধ উপেক্ষা করে রাব্বীকে গ্রেপ্তার করে স্থানীয় বিএনপি কার্যালয়ে হামলার অভিযোগে। গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে রাব্বীর স্ত্রীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই তিনি একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। কিন্তু শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়, এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

রাব্বী জানান, তার স্ত্রী গর্ভকাল থেকেই কিছু জটিলতায় ভুগছিলেন। তবে গ্রেপ্তারের ঘটনাটি মানসিকভাবে এতটা ধাক্কা দেয় যে শারীরিক অবস্থাও দ্রুত খারাপ হয়ে যায়। এ ঘটনার পর তাদের নবজাতক কন্যা শিশুকে এখন তারাই দেখতে পারছেন না, কারণ মায়ের মৃত্যুর পর পরিবারে নেমে এসেছে বিপর্যয়।

আরো জানা যায়, রাব্বী ২০২০ সালের পর থেকে ছাত্রলীগ বা আওয়ামী লীগের কোনো সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন না। বরং ২০২২ সালে স্থানীয় একজন সংসদ সদস্যের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তার নাম যুক্ত হয়, যেটিকে তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করেছেন।

এই ঘটনায় সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের একটি পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন—ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদনে স্ত্রীর আর্তনাদ, তার অনুরোধ, এবং সেই অনুরোধ অগ্রাহ্য করে স্বামীর গ্রেপ্তারের যে মানসিক ও শারীরিক পরিণতি ঘটেছিল—সেসব কিছুই ছিল না। এই পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং অনেকেই মন্তব্য করেন, “এই ঘটনা কেবল রাজনীতি নয়, এক মা, এক স্ত্রীর, এক নারীর মর্মান্তিক পরিণতি।”

এখন পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসেনি। তবে সামাজিক মাধ্যমে মানুষের ক্ষোভ দিন দিন বাড়ছে। কেউ কেউ এই ঘটনাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারের ভয়াবহ উদাহরণ বলে মনে করছেন।

এই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত ও দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবি এখন সোচ্চার হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে যখন একজন নারীর মৃত্যু এমন এক প্রেক্ষাপটে ঘটল, যেখানে তাকে রক্ষা করা সম্ভব ছিল—শুধুমাত্র কিছুটা মানবিকতা দেখালেই।

সূত্র- জুলকার নাইন সায়ের

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...