বিজ্ঞাপন
অভিযোগ রয়েছে, বরাদ্দ পাওয়া সার কৃষকদের কাছে বিক্রি না করে কৌশলে বাজারের খুচরা কীটনাশক দোকানদারদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কৃষকরা প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা গুদামের সামনে বিক্ষোভ করেন।
রবিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে দেবনগড় ইউনিয়নের নিজবাড়ি এলাকায় কেশব ট্রেডার্সের গুদামের সামনে গিয়ে দেখা যায়—কৃষকরা খেতের কাজ ফেলে সার কিনতে এলেও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও সার পাচ্ছেন না। স্থানীয়রা জানান, ডিলারের ম্যানেজার আব্দুল আজিত কয়েকজন কৃষককে সার বিক্রি করার পর সটকে পড়েন। পরে বহুবার ফোন করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের ভজনপুর বাজারে অবস্থিত বিসিআইসি অনুমোদিত কেশব ট্রেডার্সের মালিক গণেশ চন্দ্র ঘোষ। ভজনপুর বাজারে একাধিক ডিলার থাকায় উপজেলা কমিটি এ প্রতিষ্ঠানকে দেবনগড় বাজারে স্থানান্তর করে। আগস্ট মাসে এই ডিলারের বরাদ্দ ছিল—ইউরিয়া ১২৮ মেট্রিকটন, টিএসপি ৩.২০ মেট্রিকটন, এমওপি ৮.৯৫ মেট্রিকটন এবং ডিএপি ৫.৪ মেট্রিকটন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কৃষকরা বলেন, বরাদ্দ সার সরকারি দরে বিক্রি করলে ডিলারের মুনাফা কমে যাবে, তাই তিনি স্থানীয় কীটনাশক ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করেন। বাজারে এসব দোকানদার ইউরিয়ার ১৩৫০ টাকার বস্তা ১৭০০-১৯০০ টাকা ও ১০৫০ টাকার বস্তা ১২০০ টাকায় বিক্রি করছেন।
স্থানীয় কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, “রাতের আঁধারে ভ্যানে করে সার অন্যত্র নিয়ে যায়, বাজারের দোকানদারের কাছে বিক্রি করে, কিন্তু কৃষকদের দেয় না।”
বাদিয়াগছের কৃষক আজিবদ্দিন, টোটুয়াপাড়ার রাশেদুজ্জামান, নতিফগছের মজিবর রহমান ও আতমাগছের রফিকুল ইসলাম জানান, তাঁরা ৭০-১০০ জন কৃষক মিলে সার নিতে এলেও সকালে কিছু বিক্রির পর ম্যানেজার পালিয়ে যান। পরে ইউএনও ও কৃষি অফিসারকে জানালে তাঁদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হুমাউন কবির বলেন, সকালে ৩০০-৩৫০ জন কৃষক সার নিতে এসে বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে ডিলারের লোকজন বিক্রি বন্ধ করে দেয়। পরে তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানান।
দেবনগড় ইউপি চেয়ারম্যান ছলেমান আলী বলেন, “বরাদ্দ অনুযায়ী প্রায় ১০০ জনের সার পাওয়ার কথা, কিন্তু সেখানে ২ হাজারের বেশি কৃষক এসেছিলেন।” তবে উপস্থিত কৃষকরা চেয়ারম্যানের এ বক্তব্যকে পক্ষপাতমূলক বলে অভিযোগ করেন।
ডিলারের ম্যানেজার আব্দুল আজিত সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা তো ভাই সার দিচ্ছিলাম।”
উপজেলা কৃষি অফিসার তামান্না ফেরদৌস এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, “ডিলারের বিরুদ্ধে কৃষক হয়রানির সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...