Logo Logo

নবান্ন উৎসব পালন করলো বিলাইছড়ির বম সম্প্রদায়ের মানুষ


Splash Image

খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শস্য উৎসব তথা নবান্ন উৎসব রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার যমুনাছড়ি বম পাড়ায় উদযাপন করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘের অধীনে যমুনাছড়ি ব্যাপ্টিস্ট চার্চ আয়োজিত এক আধ্যাত্মিক উদ্দীপনা সভা ও শস্য উৎসব প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আঞ্চলিক ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘ চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পালক প্রধান রেভারেন্ট দিলীপ সরকার, রেভাঃ জৌলিয়াম বম, রেভাঃ জগৎ ত্রিপুরা, যমুনাছড়ি ব্যাপ্টিস্ট চার্চের রেভাঃ রবার্ট বম, পাষ্টর পাইথুই খিয়াং, পাষ্টর জাকারিয়া পাংখোয়া, বাংলাদেশ ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘের কাউন্সিলর খইসাপ্রু খিয়াং, নেইডিং পাংখোয়া প্রমুখ। এছাড়া যমুনাছড়ি প্রেসবিটেরিন চার্চ (পিসিবি), বাংলাদেশ খ্রীষ্টিয়ান চার্চ এবং যমুনাছড়ি লোকাল চার্চেও (ইসিবি) পৃথকভাবে শস্য উৎসব পালন করা হয়।

শস্য উৎসবটি মূলত জুম থেকে তোলা নতুন ফসল যেমন—ধান, মরিচ, ভূট্টা, মারফাসহ নানা ধরনের শাক-সবজি এবং ফলমূল গীর্জায় নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানানোর মাধ্যমে উদযাপন করা হয়। যমুনাছড়ি বম পাড়ায় প্রতি বছর এই দিনটিতে অনুষ্ঠানটি জমজমকপূর্ণভাবে আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুমের প্রথম ফসল আহরণের পর সবাই তা গীর্জায় নিয়ে আসে এবং ধর্মযাজকের নেতৃত্বে প্রার্থনার মাধ্যমে ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। পরে এই ফলমূল আনন্দের সঙ্গে সবাই ভাগাভাগি করে খায়।

আঞ্চলিক ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘ চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পালক প্রধান রেভারেন্ট দিলীপ সরকার বলেন, “বহু বছর আগে ইসরাইল জাতি মিশর দেশে প্রায় ৪৩০ বছর বন্দীত্ব জীবন কাটিয়েছিল। ঈশ্বর তাদের উদ্ধারের পর দুগ্ধমধু প্রবাহিত দেশ বর্তমান জেরুজালেমে পৌঁছে দিয়েছেন। ২য় বিবরণ ২৮ অধ্যায়ের ১ থেকে ১৪ পদে লেখা আছে, ‘যখন তুমি পরবাসে ছিলে, বন্দীত্ব জীবন যাপন করেছো, সেই দেশে আমি তোমাদের অনেকভাবে লালন-পালন করেছি, নিরাপত্তা দিয়েছি, প্রয়োজন মিটিয়েছি এবং খাদ্য দিয়েছি।’ আজ আমরা খ্রীষ্টানরা প্রভু যিশুর প্রতি বিশ্বাস রেখে সেই ঐতিহ্যকে ধারন করছি।”

তিনি আরও বলেন, “যমুনাছড়িতে যে সমস্ত খ্রীষ্টান ভক্ত বসবাস করেন তারা জুম চাষ, ভূট্টা চাষ, শাক-সবজি চাষ এবং পশুপালনের মাধ্যমে তাদের জীবনধারণ করছেন। অনেক বিপদ ও চ্যালেঞ্জের মধ্যেও তারা প্রতিনিয়ত প্রভুর কাছে প্রার্থনা করেন। তাদের প্রথম ফসল—কুমড়া, ধান, ভূট্টা, সবজি ও বিভিন্ন প্রকার ফলমূল—আজকের এই শস্য উৎসবের মাধ্যমে চার্চে আনা হয়েছে। এটি আমাদের আদি পুরুষদের প্রথার ধারাবাহিকতা, যেখানে ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করা হয়।”

শস্য উৎসবের মাধ্যমে যমুনাছড়ির খ্রীষ্টান সম্প্রদায় তাদের কৃষ্টি ও ধর্মীয় ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ এবং নতুন ফসলের জন্য ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।

প্রতিবেদক- অসীম চাকমা, বিলাইছড়ি, রাঙামাটি।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...