Logo Logo

ফিলিপাইনে ধেয়ে আসছে সুপার টাইফুন ফাং ওং, নিরাপদ আশ্রয়ে ৯ লাখ মানুষ


Splash Image

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইনের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার টাইফুন ফাং ওং। দেশটির প্রায় পুরো অঞ্চলজুড়ে এই টাইফুনটি গভীর রাতে আঘাত হানতে পারে। ইতোমধ্যেই ঝড়টি সুপার টাইফুনের আকার ধারণ করেছে।


বিজ্ঞাপন


শক্তিশালী এই ঝড়ের আতঙ্কে ৯ লাখেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রোববার (৯ নভেম্বর) পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা এএফপি ও রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

ফিলিপাইনের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, রোববার গভীর রাতে সুপার টাইফুন ফাং ওং ছোট দ্বীপ ক্যাটানডুয়ানেসে সরাসরি আঘাত হানতে পারে। ইতোমধ্যেই সেখানে ভোর থেকে বাতাস ও বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। তীব্র ঝোড়ো হাওয়ায় উপকূলের রাস্তাগুলোয় ঢেউ আছড়ে পড়ছে।

আবহাওয়া দপ্তর বলেছে, সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় কালমায়েগি আঘাত হানার মাত্র কয়েকদিন পরই এই ঘূর্ণিঝড় পশ্চিম দিকে ধেয়ে আসছে। কেন্দ্রস্থলের কাছে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে, আর ঝোড়ো হাওয়া বইছে ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার বেগে।

ক্যাটানডুয়ানেসের ভিরাক শহরের ৩৩ বছর বয়সী বাসিন্দা এডসন ক্যাসারিনো এএফপিকে বলেন, “এখন প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে, আর আমি বাতাসের শো শো শব্দ শুনতে পাচ্ছি। স্থানীয় সময় সকাল ৭টার দিকে ঢেউয়ের গর্জন শুরু হয়। সমুদ্রের ঢেউগুলো আঘাত শুরু করার পর মনে হচ্ছিল যেন মাটি কাঁপছে।”

ফিলিপাইনের বৃহত্তম দ্বীপ দক্ষিণ লুজের সোরসোগনে শহরের অনেকেই একটি গির্জায় আশ্রয় নিয়েছেন। ম্যাক্সিন ডুগান নামের এক ব্যক্তি শনিবার এএফপিকে বলেন, “আমি এখানে আশ্রয় নিয়েছি কারণ আমার বাড়ির কাছে বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ছে। আমি তীরের কাছে থাকি, তাই সেখানকার বাতাস এখন খুব শক্তিশালী।”

উপকূলীয় অরোরা প্রদেশে রোববার গভীর রাতে অথবা সোমবার ভোরে ফাং ওং আছড়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধারকারীরা সেখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে উৎসাহিত করছেন।

সরকারি আবহাওয়াবিদ বেনিসন এস্তারেজা শনিবার সাংবাদিকদের জানান, টাইফুন ফাং ওং-এর প্রভাবে প্রায় ২০০ মিলিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই বৃষ্টি ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি করতে পারে এবং প্রধান নদী অববাহিকা উপচে পড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক করে আসছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ধরনের ঝড়গুলো আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে টাইফুনগুলো দ্রুত শক্তিশালী হতে পারে এবং আর্দ্র বায়ুমণ্ডল ভারী বৃষ্টিপাত সৃষ্টি করে।

এর আগে মাত্র কয়েকদিন আগে সেবু প্রদেশে টাইফুন কালমায়েগি আঘাত হানে। এতে ব্যাপক বন্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি কমপক্ষে ২২৪ জনের প্রাণহানি হয়। এছাড়া আরও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। কালমায়েগি গত শুক্রবার ভিয়েতনামজুড়ে তাণ্ডব চালায়, যেখানে কমপক্ষে আরও পাঁচজনের প্রাণহানি ঘটে।

ফিলিপিনো উদ্ধার কর্মকর্তা মাইরা ডেভেন শনিবার জানান, আসন্ন ঝড়ের কারণে সেবু প্রদেশে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। তার মতে, কালমায়েগির তাণ্ডবে নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশের মৃত্যু সেবু প্রদেশে ঘটেছে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী এই প্রদেশে নিখোঁজ রয়েছেন ৫৭ জন, তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ডেভেন আরও বলেন, “আজ বিকেল ৩টায় আমাদের অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান সাময়িকভাবে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের উদ্ধারকারীদের নিরাপত্তার বিষয়ে ঝুঁকি নিতে পারি না। অনেক রাস্তা এখনো অবরুদ্ধ, তাই কিছু এলাকায় প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি।”

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...