বিজ্ঞাপন
বিশেষ করে বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর, দুর্গাপুর ও লক্ষীনারায়ণপুর গ্রামসহ কিছু স্থানে পানি আরও বেড়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, ফেনী জেলার পানি ঢুকে পড়ায় এবং বৃষ্টি না থাকলেও এ অঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
শনিবার (১১ জুলাই) সকালে জেলার সদর, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলার বাসিন্দারা জানান, তাদের এলাকায় পানি ধীর গতিতে নামছে। ফলে বেশিরভাগ জায়গায় এখনো বন্যার পানি জমে আছে এবং এতে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্যমতে, ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে জেলার ছয়টি উপজেলার ৫৭টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। এতে ৪৬ হাজার ৭০টি পরিবারের প্রায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৫০৩ জন মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। কবিরহাট ও সুবর্ণচর উপজেলায় আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৫টি বসতঘর এবং সুবর্ণচরে একটি বসতঘর সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব এবং পানি নিষ্কাশনের নালা ও জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়ায় শহরের জলাবদ্ধতা বেড়েই চলেছে। অনেকেই স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতাকে দায়ী করছেন। সামান্য বৃষ্টিতেই নোয়াখালী পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। মাইজদীর লক্ষীনারায়ণপুর, সেন্ট্রাল রোড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা শিল্পকলা একাডেমি এবং আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকায় এখনো রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে রয়েছে। অনেক বাসাবাড়িতেও পানি জমে আছে। যদিও টানা বৃষ্টির বিরতিতে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে, তবে সার্বিক পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে তেমন কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি এবং বর্তমানে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও নেই। তবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে বলে তিনি জানান।
বেগমগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, “কয়েকটি গ্রামে পানি বাড়ার বিষয়ে আমার জানা নেই।”
জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান জানান, পাঁচটি উপজেলায় ৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ১ হাজার ৮৫০ জন মানুষ এবং আশ্রয় কেন্দ্রে ১৭১টি গবাদিপশু রাখা হয়েছে। দুর্গতদের চিকিৎসায় ৫১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৯টি টিম ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, “পানি নিষ্কাশনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে।”
প্রতিবেদক - গিয়াস রনি, নোয়াখালী।