Logo Logo
বিশ্ব

সিরিয়ার সুয়েইদায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে নিহত অন্তত ৩০, আহত শতাধিক


Splash Image

ছবি : সংগৃহীত।

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর সুয়েইদায় সম্প্রদায়ভিত্তিক সহিংস সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। বেদুইন সুন্নি গোত্র ও দ্রুজ ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক।


বিজ্ঞাপন


পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় প্রশাসন শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে।

সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে বিবিসির খবরে জানানো হয়েছে, সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৩০ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে লন্ডনভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, এই সংখ্যা ৩৭ জন ছাড়িয়ে গেছে।

সুয়েইদা শহরের প্রধান সরকারি হাসপাতাল জানিয়েছে, সহিংসতার পর হাসপাতালের মর্গে অন্তত ১৫ জনের মরদেহ আনা হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন এবং কিছু রোগীকে আশপাশের দেরা’য় শহরের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে উন্নত চিকিৎসার জন্য।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘর্ষের পেছনে রয়েছে সিরিয়ার চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তাহীনতা। গত বছরের ডিসেম্বরে দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকেই দেশটিতে শাসন কাঠামো ও আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। ইসলামপন্থী বিদ্রোহী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) রাজধানী দামেস্কে সফল হামলার মাধ্যমে আসাদ সরকারের পতন ঘটায়।

ক্ষমতার এই রদবদলের পর থেকেই জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে। বিশেষ করে দ্রুজ যোদ্ধা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ আগেও বহুবার প্রাণঘাতী রূপ নিয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসেও এ ধরনের সংঘর্ষে প্রাণ হারান কমপক্ষে ৫০ জন।

সুয়েইদা প্রদেশের গভর্নর মুস্তাফা আল-বাকুর শহরের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “জাতীয় পুনর্গঠনের লক্ষ্যে আমাদের সংযমী হতে হবে। সহিংসতা কোনো সমাধান নয়।” একই আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বিভিন্ন আধ্যাত্মিক নেতা।

উল্লেখ্য, দ্রুজ সম্প্রদায় সিরিয়াসহ লেবানন, জর্ডান এবং ইসরায়েলে বসবাস করে। সিরিয়ায় তারা আগে আসাদ সরকারের সময় প্রায় নিরব থাকলেও বর্তমানে তারা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া একাধিক সাক্ষাৎকারে দ্রুজ সম্প্রদায়ের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাদের প্রধান উদ্বেগ শারীরিক হামলার চেয়ে বেশি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার অভাব নিয়ে।

এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে সিরিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক তৎপরতা নতুন মাত্রা পেয়েছে। চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্র ইসলামপন্থী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শামকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। একই সময় যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি সিরিয়ায় সফর করেছেন, যা গৃহযুদ্ধ শুরুর পর প্রথম কোনো ব্রিটিশ মন্ত্রীর দেশটিতে পদার্পণ।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সফর এবং তালিকা পরিবর্তন সিরিয়ার নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা বিশ্বের নীতিগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে দেশের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সমাধানে কার্যকর কোনো কূটনৈতিক উদ্যোগ এখনও দৃশ্যমান নয়।

আরও পড়ুন

জবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম পুনর্মিলন
জবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম পুনর্মিলন
নড়াইলে জেলা বিএনপির মৌন মিছিল ও সমাবেশ
নড়াইলে জেলা বিএনপির মৌন মিছিল ও সমাবেশ