Logo Logo

টানা ৪ দিন সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত সিরিয়া-ইসরায়েল


Splash Image

টানা চার দিন ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘাত ও প্রাণহানির পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই প্রতিবেশী দেশ—ইসরায়েল ও সিরিয়া। এতে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে সংঘাতপীড়িত সোয়েইদার সাধারণ মানুষ। তবে এখনো গভীর মানবিক সংকট বিরাজ করছে অঞ্চলটিতে।


বিজ্ঞাপন


তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম বারাক গতকাল শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বার্তায় তিনি লেখেন, “তুরস্ক, জর্ডান এবং অন্যান্য প্রতিবেশীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইসরায়েল এবং সিরিয়া যুদ্ধবিরতিতে যেতে সম্মত হয়েছে। আমাদের সব দ্রুজ, বেদুইন এবং সুন্নিদের অস্ত্র সমর্পণ করে সব নাগরিককে সঙ্গে নিয়ে একটি নতুন সিরিয়া গঠনের কাজ এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

যুদ্ধবিরতি নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাস এবং কানাডার সিরীয় কনস্যুলেটের সঙ্গে যোগাযোগ করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তবে কোনো পক্ষই তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

গত মঙ্গলবার সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সোয়েইদা প্রদেশে একটি পারিবারিক জমায়েতে বন্দুকধারীদের হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত হয় এবং বহু লোক আহত হয়। হামলাকারীরা ছিলেন সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা’র নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক জোট হায়াত তাহরির আল শামস (এইচটিএস) এর সদস্য এবং কট্টর সুন্নি মতাদর্শে বিশ্বাসী।

পরদিন বুধবার ইসরায়েল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সোয়েইদায় সিরীয় সামরিক বাহিনীর অবস্থানে বিমান হামলা চালায়। তেল আবিবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সিরিয়ায় দ্রুজ ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয়েছে এবং ইসরায়েল দ্রুজ সম্প্রদায়কে রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

গত এক সপ্তাহ ধরে সোয়েইদায় দ্রুজ, বেদুইন ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম সাম্প্রদায়িক সংঘাত চলে আসছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা সেনা মোতায়েন করলেও তা সংঘাত প্রশমনের বদলে আরও তীব্র করে তোলে। এরই প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা সংঘর্ষের মাত্রা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।

চার দিনব্যাপী সংঘাতে সোয়েইদার বাসিন্দারা মানবিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন। খাদ্য, পানি ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট পরিষেবা।

সোয়েইদার ২৮ বছর বয়সী বাসিন্দা মুদার রয়টার্সকে বলেন, “আমরা ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে আছি। গত চার দিন ধরে সোয়েইদায় খাবার নেই, পানি নেই, জ্বালানি নেই, বিদ্যুৎ নেই— এক কথায় কিছুই নেই।”

দ্রুজরা একটি ধর্মীয় সংখ্যালঘু হলেও সিরিয়া ও আশপাশের অঞ্চলে তাদের উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। ইরানি সুফি সাধক ও ধর্মগুরু ইসমাইল নাশতাকিন আদ-দারাজির অনুসারীরাই দ্রুজ নামে পরিচিত। নবম শতকের শেষ দিকে এই ধর্মমতের উৎপত্তি হয়।

দ্রুজ ধর্মবিশ্বাস ইসলামের শিয়া মতবাদের একটি শাখা। তারা নিজেদের আহলে তাওহিদ (একেশ্বরবাদী) পরিচয়ে তুলে ধরেন। মুসলিমদের মতোই তারা আল্লাহ, হযরত মুহাম্মদ (স.) এবং চার খলিফায় বিশ্বাস করেন। তবে দ্রুজদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বাস হলো, মানুষের মধ্যেই সৃষ্টিকর্তা বিরাজমান।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...