হামাসের সামরিক মুখপাত্র আবু ওবাইদা। ছবি: সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
এক ভিডিও বার্তায় হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবাইদা বলেন, “গণহত্যার যুদ্ধ” অব্যাহত রাখলে ইসরায়েল আরও বেশি সেনা ও অফিসার হারাবে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুদ্ধবিরতির পর মার্চে ইসরায়েল নতুন করে গাজায় তীব্র হামলা শুরু করার পর এটি আবু ওবাইদার প্রথম প্রকাশ্য ভিডিও বক্তব্য। এতে তিনি জানান, এই সময়ের মধ্যে “শত শত ইসরায়েলি সৈন্য নিহত বা আহত হয়েছে” এবং “হাজার হাজার মানুষ মানসিক আঘাত ও স্নায়বিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছে।”
আবু ওবাইদা বলেন, “আমরা ক্ষয়ক্ষতির যুদ্ধ চালিয়ে যেতে প্রস্তুত। গাজাজুড়ে ইসরায়েলি সৈন্যদের হত্যা ও বন্দী করার লক্ষ্যে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এই শাসনব্যবস্থার বন্দীদের প্রতি কোনো প্রকৃত আগ্রহ নেই, কারণ তারা সৈনিক।” হামাসের পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে “ইসরায়েলি সৈন্যদের ধরে ফেলার” অপারেশনের কথাও জানান তিনি।
তিনি হুঁশিয়ারি দেন, “যদি এই সন্ত্রাসী সরকার গণহত্যামূলক যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তাদের আরও সৈন্য ও অফিসারদের কফিনে গ্রহণের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”
বক্তব্যে আরব বিশ্বের নেতৃত্ব ও অভিজাতদের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে আবু ওবাইদা বলেন, “তোমাদের ঘাড় হাজার হাজার নিরীহ মানুষের রক্তে ভারাক্রান্ত, যারা তোমাদের নীরবতার কারণে বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছে।” তিনি মনে করেন, এই নীরবতা ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর চলমান হত্যা, অনাহার ও চিকিৎসা-সেবা বঞ্চনার অন্যতম সহায়ক।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের শত্রুকে ক্রমাগত বিশ্বব্যাপী নিপীড়ক শক্তির দ্বারা সমর্থিত করা হচ্ছে, যাদের কাছে অফুরন্ত অস্ত্র ও গোলাবারুদের মজুদ রয়েছে।”
গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গে হামাস মুখপাত্র বলেন, “সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হামাস একটি ‘ব্যাপক চুক্তি’ প্রস্তাব করেছিল, যার মাধ্যমে সমস্ত ইসরায়েলি বন্দীকে একবারে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তবে নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা তা প্রত্যাখ্যান করেছে।”
জানা গেছে, বর্তমানে গাজায় হামাসের হাতে প্রায় ৫০ জন বন্দী রয়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। হামাসের দাবি, তারা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের বিনিময়ে সকল বন্দীকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত।