Logo Logo

জাতিসংঘে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠক : সম্পর্ক উন্নয়নের পথে নতুন অধ্যায়


Splash Image

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। ফাইল ছবি

জাতিসংঘের উদ্যোগে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত 'টু-স্টেট সল্যুশন' সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।


বিজ্ঞাপন


সোমবার (২৮ জুলাই) অনুষ্ঠিত এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই দেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পর্যালোচনা করেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। তারা পারস্পরিক সহযোগিতা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভবিষ্যতে উচ্চপর্যায়ের সফর বিনিময়ের মাধ্যমে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং মানুষে-মানুষে সম্পর্ক জোরদারে একমত হয়েছেন।

বৈঠকে গাজায় চলমান মানবিক সংকট এবং ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন দুই নেতা। ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি তাদের অবিচল সংহতি প্রকাশের পাশাপাশি, চলমান সম্মেলন থেকে কার্যকর ও তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসার ওপর জোর দেন তারা।

২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার বরফ গলতে শুরু করে। নতুন সরকারের শাসনামলে দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের প্রতি কড়া অবস্থান থেকে সরে এসে ঢাকার নীতিতে দৃশ্যমান ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। এর ফলে দুই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণ এশীয় দেশের মধ্যে বাস্তবমুখী ও অগ্রগতিমূলক সম্পর্ক গড়ে ওঠার বাস্তব সুযোগ সৃষ্টি হয়।

এই প্রেক্ষাপটেই গত সপ্তাহে ঢাকায় এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি এবং বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বৈঠকে কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকারে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি ভবিষ্যতে বাণিজ্য, রাষ্ট্রীয় যোগাযোগ এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

চীনপ্রভাবিত নতুন আঞ্চলিক বাস্তবতা এবং সার্কের মতো ঐতিহ্যবাহী আঞ্চলিক জোটগুলোর গুরুত্ব ক্রমশ কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয়েই তাদের পররাষ্ট্রনীতিকে পুনর্বিন্যাসে মনোযোগী হয়েছে। অতীতের দ্বন্দ্বের গন্ডি থেকে বেরিয়ে এসে উভয় দেশ এখন উন্নয়ন, বাণিজ্য এবং কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের ভিত্তিতে ইস্যুভিত্তিক সহযোগিতায় মনোযোগ দিচ্ছে।

এদিকে, দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগত অবস্থান শক্তিশালী করতে পাকিস্তান সম্প্রতি তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করেছে। মুসলিম বিশ্বের ঐক্য সংহত করা এবং আঞ্চলিক কূটনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার লক্ষ্যেই এ পদক্ষেপ নিচ্ছে ইসলামাবাদ।

জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ অস্থায়ীভাবে পাকিস্তানি কূটনীতিক ও পণ্যের ওপর আরোপিত কয়েকটি বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের সম্পর্কে নতুন গতি এনে দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...