Logo Logo

ভারতের ওপর ট্রাম্পের নতুন শুল্ক : 'অন্যায়-অযৌক্তিক' বলছে দিল্লি


Splash Image

রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় জ্বালানি তেল কিনে চলায় ভারতের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ট্রাম্পের এই অবস্থানকে ‘অন্যায্য’ ও ‘অযৌক্তিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।


বিজ্ঞাপন


একই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে জ্বালানি বাণিজ্য অব্যাহত রাখারও ইঙ্গিত দিয়েছে নয়াদিল্লি।

ট্রাম্প সম্প্রতি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ভারতকে উদ্দেশ করে বলেন, “রাশিয়ার চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধে ইউক্রেনে প্রতিনিয়ত মানুষ মারা যাচ্ছে, অথচ ভারত সেই রাশিয়ার কাছ থেকেই তেল কিনে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের ওপর শুল্ক আরও বাড়ানো হবে।”

ট্রাম্পের এই মন্তব্যের মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি জোরালো বিবৃতি দেয়। তাতে বলা হয়, “যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিজেরাই রাশিয়ার সঙ্গে বিশাল পরিমাণে বাণিজ্য করছে। সেই তুলনায় ভারতের ভূমিকা অনেক সীমিত। একতরফাভাবে ভারতকে দায়ী করা অন্যায্য ও অযৌক্তিক।”

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার সঙ্গে ৬ হাজার ৭৫০ কোটি ইউরোর সমপরিমাণ বাণিজ্য করেছে। তার আগের বছরও ছিল ১ হাজার ৭২০ কোটি ইউরোর বেশি। অথচ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থেকেও এই বাণিজ্য চলে আসছে।”

নয়াদিল্লি আরও জানায়, ইউরোপ এখনো রাশিয়ার ওপর সার, খনিজ, রাসায়নিক দ্রব্য, মেশিনারি এবং জ্বালানির জন্য নির্ভরশীল। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই রাশিয়ার কাছ থেকে তার পরমাণু শিল্পের জন্য হেক্সাফ্লোরাইড, বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য পাল্লাডিয়াম, এবং সার ও রাসায়নিক পণ্য আমদানি করছে।

বিবৃতিতে প্রশ্ন তোলা হয়, “যেখানে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে, সেখানে ভারতের ওপর চাপ প্রয়োগ করা কতটা ন্যায়সংগত?”

জানা গেছে, আগামী ৭ আগস্ট থেকে ভারতের ওপর নতুন করে ২৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক কার্যকর করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যা মূলত বিভিন্ন শিল্পপণ্য, স্টিল, ওষুধ ও কৃষিপণ্যের ওপর প্রভাব ফেলবে।

ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, জ্বালানি বাজারে স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং জনগণকে ন্যায্যমূল্যে জ্বালানি সরবরাহ করাকে তারা জাতীয় স্বার্থ হিসেবে দেখে। সেই স্বার্থ রক্ষায় রাশিয়ার সঙ্গে তেল কেনা অব্যাহত থাকবে।

বিবৃতিতে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, “যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তখন যুক্তরাষ্ট্রই ভারতকে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে বাজার স্থিতিশীল রাখতে উৎসাহ দিয়েছিল।”

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এ ধরনের বক্তব্য তার নির্বাচনী কৌশলের অংশ হতে পারে, যেখানে তিনি বিদেশি বাণিজ্যকে দায়ী করে অভ্যন্তরীণ ভোটারদের মন জয় করতে চান। তবে ভারতের স্পষ্ট ও তথ্যভিত্তিক জবাব কূটনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিচ্ছে।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...