সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওরে কাদা পানিতে সারিবদ্ধভাবে বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন একদল কৃষক।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা গেছে, টাঙ্গুয়ার হাওর, শনির হাওর, দেখার হাওর ও নলুয়ার হাওরসহ জেলার প্রায় ২৪টি উল্লেখযোগ্য হাওরে একযোগে চলছে চারা রোপণের কাজ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাদা-পানিতে নেমে দলবদ্ধভাবে কাজ করছেন নারী-পুরুষ কৃষকরা। কেউ বীজতলা থেকে চারা তুলছেন, কেউ তা বহন করে মূল জমিতে নিয়ে যাচ্ছেন, আবার কেউ পরম মমতায় সারিবদ্ধভাবে সেই চারা রোপণ করছেন। হাওরের সবুজ প্রান্তরজুড়ে কৃষকদের এই কর্মব্যস্ততা এক নয়নাভিরাম দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে।
হাওরাঞ্চলের মানুষের প্রধান জীবিকা এই বোরো ফসল। কৃষকরা জানান, এ বছর আবহাওয়া এখন পর্যন্ত তাদের অনুকূলে রয়েছে। তবে ভালো ফলনের আশা থাকলেও তাদের মনে কাজ করছে আগাম বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের আতঙ্ক। গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে তারা কিছুটা দুশ্চিন্তায় থাকলেও সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের মতে, সঠিক সময়ে রোপণ সম্পন্ন করতে পারলে এবং প্রকৃতি সহায় থাকলে জেলায় বাম্পার ফলন সম্ভব।
সুনামগঞ্জ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বোরো আবাদ এগিয়ে চলছে। ধান চাষ উপযোগী পরিবেশ বজায় রাখতে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে থেকে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করছেন। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
হাওরের বুকজুড়ে এই বিশাল কর্মচাঞ্চল্য শুধু স্থানীয় কৃষকদের জীবিকার নিশ্চয়তাই নয়, বরং জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা। সুনামগঞ্জের হাওরে উৎপাদিত এই বোরো ধান দেশের চালের চাহিদার একটি বড় অংশ পূরণ করে থাকে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...