বিজ্ঞাপন
ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনা প্রশমনে ট্রাম্পের ‘গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ভূমিকা’কে স্বীকৃতি দিয়ে এ প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে বলে ইসলামাবাদ জানিয়েছে।
পাকিস্তান সরকারের অফিসিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনে ট্রাম্পের ‘দূরদর্শী কূটনৈতিক তৎপরতা ও বিচক্ষণ নেতৃত্ব’ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়, ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ সম্ভাব্য যুদ্ধ এড়িয়ে লাখো মানুষের জীবন রক্ষার পথ সুগম করেছে।
পাকিস্তান এই সাম্প্রতিক উত্তেজনার নাম দিয়েছে ‘২০২৫ ভারত-পাকিস্তান সংকট’। ইসলামাবাদের ভাষায়, ভারতের ‘উসকানিমূলক ও বেআইনি আগ্রাসন’ তাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে এবং এতে ব্যাপক বেসামরিক হতাহত হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান চালায় ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস’, যা সরকার বলছে, ছিল ‘পরিমিত ও নিখুঁত সামরিক প্রতিরোধ’। এ অভিযানের লক্ষ্য ছিল বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যখন পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল, তখন ট্রাম্পের গোপন কূটনৈতিক যোগাযোগ ও মধ্যস্থতা জট খুলে দেয়। ইসলামাবাদ জানায়, তিনি একই সঙ্গে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের সঙ্গে সরাসরি সংলাপে জড়িয়ে সংকট নিরসনে ‘দুর্লভ রাষ্ট্রনায়কত্ব’ দেখিয়েছেন।
পাকিস্তান সরকারের মতে, এই ঘটনা প্রমাণ করে ট্রাম্প সত্যিকারের শান্তির দূত হিসেবে কাজ করেছেন এবং সমস্যা সমাধানে আলোচনাকেই বেছে নিয়েছেন।
কাশ্মীর ইস্যুতে ট্রাম্পের আগের ও বর্তমান মধ্যস্থতার প্রস্তাবেরও প্রশংসা করেছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ বলেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তার প্রচেষ্টা আন্তরিকতার প্রতিফলন। পাশাপাশি সরকার আবারও দাবি করেছে, জাতিসংঘের প্রস্তাবনা অনুযায়ী কাশ্মীর সমস্যার সমাধান ছাড়া এই অঞ্চলে প্রকৃত শান্তি অর্জন সম্ভব নয়।
বিবৃতিটি প্রকাশিত হলো এমন এক সময়ে, যখন ট্রাম্প নিজেই সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে দাবি করেছেন, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ঠেকানোর জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য। ট্রাম্প বলেন, “পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ থামানোর জন্য আমার নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত ছিল। রুয়ান্ডা, কঙ্গো, সার্বিয়া, কসোভো—অনেক উদাহরণ আছে। সবচেয়ে বড় উদাহরণ ভারত-পাকিস্তান। অন্তত চার-পাঁচবার আমার নোবেল পাওয়া উচিত ছিল।”
তবে এ কথার পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, “নোবেল কেবল লিবারেলদেরই দেওয়া হয়, আমাকে কখনো দেবে না।”
এই বিতর্কিত মন্তব্য এবং ইসলামাবাদের আনুষ্ঠানিক অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিতে নতুন আলোচনার সূচনা করেছে। ট্রাম্প সত্যিই শান্তির দূত, না কি নিজের ভাবমূর্তি রক্ষার প্রচেষ্টায় সক্রিয়—এই প্রশ্নে বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে বিশ্লেষণ ও বিতর্ক।
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...