Logo Logo
রাজনীতি
দ্য গার্ডিয়ানের অনুসন্ধান

হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠদের যুক্তরাজ্যে বিলাসবহুল সম্পদ লেনদেন


Splash Image

ফাইল ছবি

বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের আগে নিরাপত্তা বাহিনী শত শত বিক্ষোভকারীর রক্ত ঝরায়।


বিজ্ঞাপন


সেই সরকারের পতনের প্রায় এক বছর পরও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তিক্ত দলীয় রাজনীতি ও অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে লড়াই করছে।

এমন এক প্রেক্ষাপটে লন্ডনের নাইটসব্রিজের প্রাসাদ কিংবা সারেতে বিলাসবহুল ভিলা আলোচনায় এসেছে। যুক্তরাজ্যের বিলাসবহুল রিয়েল এস্টেট এখন বাংলাদেশের দুর্নীতিবিরোধী তদন্তের কেন্দ্রে।

তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন—হাসিনা সরকারের আমলে ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা রাষ্ট্রীয় চুক্তি, ব্যাংকিং খাত ও অন্যান্য উৎস থেকে লুট করা বিপুল অর্থ ব্রিটেনে স্থানান্তর করেছিলেন কি না।

গত মে মাসে ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)—যা ব্রিটেনের এফবিআই হিসেবে পরিচিত—সালমান এফ রহমানের পরিবারের সদস্যদের প্রায় ৯০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পত্তি জব্দ করে। এর তিন সপ্তাহ পর সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ১৭০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি মূল্যের সম্পত্তি ফ্রিজ করা হয়। হাসিনা সরকারের আমলে তিনি ব্রিটেনে ৩০০টির বেশি অ্যাপার্টমেন্ট ও টাউনহাউস কিনেছিলেন।

যুক্তরাজ্যে সম্পদ বেচাকেনা নিয়ে সন্দেহ

দ্য গার্ডিয়ান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের যৌথ অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকার তদন্তাধীন বেশ কয়েকজন ব্যক্তি অভ্যুত্থানের পর থেকে ব্রিটেনে সম্পত্তি বিক্রি, হস্তান্তর বা পুনঃঋণায়ন করছেন। এসব লেনদেন প্রশ্ন তুলছে—ব্রিটিশ আইনের ফাঁকফোকর ব্যবহার করে তারা কিভাবে অবাধে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং আইনজীবীরা যথাযথ সতর্কতা নিয়েছেন কি না।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহভাজনদের আরও সম্পদ জব্দ করতে। কেউ এটিকে দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযান হিসেবে দেখছেন, কেউ আবার রাজনৈতিক প্রতিশোধ হিসেবে বিবেচনা করছেন।

লন্ডনে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা

গত জুনের শুরুতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল লন্ডনের পাঁচতারা হোটেল ‘দ্য ডরচেস্টার’-এ অবস্থান করে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের উদ্যোগ নেয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, “আমরা জানি অনেকেই এখন সম্পদ বিক্রি করতে চাইছে। তাই আমরা চাই, যুক্তরাজ্য সরকার আরও সম্পত্তি ফ্রিজ করুক।”

দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জানান, তিনি এনসিএ-কে অনুরোধ করেছেন যাতে তারা তদন্তাধীন আরও কিছু সম্পত্তি জব্দের কথা বিবেচনা করে।

সম্পত্তি লেনদেনের গতিবিধি

যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধন দপ্তরের তথ্যে দেখা গেছে, গত এক বছরে তদন্তাধীন ব্যক্তিদের সম্পত্তি নিয়ে অন্তত ২০টি লেনদেনের আবেদন জমা পড়েছে।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই আনিসুজ্জামান লন্ডনে একাধিক সম্পত্তি বিক্রয় ও পুনঃঅর্থায়নের সাথে যুক্ত ছিলেন। অন্যদিকে সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান রহমান ও ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের মালিকানাধীন মেফেয়ারের ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ডের অ্যাপার্টমেন্ট গত মাসে এনসিএ ফ্রিজ করেছে।

তাদের আইনজীবীরা বলেছেন, “আমরা যেকোনো তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত এবং কোনো অবৈধ কাজ করিনি।”

দ্রুত পদক্ষেপের দাবি

যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্য জো পাওয়েল এমপি বলেছেন, “তদন্ত চলাকালে সম্পদ ফ্রিজ না করলে তা দ্রুত অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে।” তিনি এনসিএর পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে আরও সম্পদ জব্দের দাবি করেছেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, যেসব ব্রিটিশ আইনজীবী ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান এসব লেনদেনে সহায়তা করছে, তাদের আরও কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

দুদক তাদের চলমান তদন্ত সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

-এমকে

আরও পড়ুন

শিখে নিন দুপুরের জন্য তিনটি জনপ্রিয় মাছের রেসিপি
শিখে নিন দুপুরের জন্য তিনটি জনপ্রিয় মাছের রেসিপি
কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ১৫ অক্টোবর দাখিলের নির্দেশ
কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ১৫ অক্টোবর দাখিলের নির্দেশ