বিজ্ঞাপন
বছরের পর বছর ধরে এই রাস্তার কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন, শিক্ষার পরিবেশ ও জরুরি চিকিৎসা সেবা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বীরগ্রামের কালু মিয়ার বাড়ি থেকে পেংড়াপাড়া এবং খোট্টাপাড়া খেলার মাঠ থেকে দড়িমুকন্দ পর্যন্ত এই রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে কাঁচা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে কর্দমাক্ত হয়ে পড়া এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছেন খোট্টাপাড়া, বীরগ্রাম, ভাদাইশপাড়া, রাজবাড়ী, বাঘমারা, হাতিগাড়া, কদিমুকন্দ ও পেংড়াপাড়া গ্রামের মানুষ।
এই এলাকা মূলত কৃষি ও মৎস্য খামার নির্ভর। প্রায় ৫০টিরও বেশি ছোট-বড় পুকুরে মাছ চাষ হয়, আর প্রায় ১ হাজার একর জমিতে ধান, আলু, মরিচ, পাটসহ নানা ফসল উৎপন্ন হয়। কিন্তু চলাচলের উপযোগী রাস্তা না থাকায় চাষের পর উৎপাদিত মাছ ও ফসল সময়মতো বাজারে পৌঁছানো যায় না। ফলে চাষিরা ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হন, অনেকেই কৃষি পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
শুধু কৃষি নয়, এই রাস্তাটির দুরবস্থার কারণে শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন স্কুল ও কলেজে যাতায়াতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বৃষ্টির সময় কাদা মাখা রাস্তা ও খানাখন্দে ভর্তি পথ পার হতে গিয়ে অনেকেই স্কুলে যেতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। এতে পিছিয়ে পড়ছে এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থা।
স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে সময়মতো তাকে হাসপাতালে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। রাস্তায় যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, অনেক সময় হেঁটেই রোগীকে বহন করতে হয়। এতে সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ায় প্রাণহানির ঝুঁকিও বাড়ছে।
খোট্টাপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল আজিজ, ইসমাইল, সোলাইমান বলেন, “আমরা স্মার্ট বাংলাদেশে বাস করছি, কিন্তু মাত্র একটি রাস্তার কারণে কৃষি, শিক্ষা ও চিকিৎসায় পিছিয়ে আছি। এই রাস্তা পাকা হলে আমাদের আটটি গ্রামের দৃশ্যপটই পাল্টে যাবে।”
বীরগ্রাম, দড়িমুকুন্দ ও ভাদাইশপাড়ার কালু, রঞ্জু মিয়া ও রাইসুলসহ দশজন গ্রামবাসী বলেন, “এটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি অঞ্চল। মানুষের জীবনমান উন্নয়নের স্বার্থে অতি দ্রুত রাস্তা সংস্কারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বলেন, “রাস্তাটি পাকা করার বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।”
শেরপুর উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ বলেন, “রাস্তাটিকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি নতুন প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, সামনের বরাদ্দে অনুমোদন হয়ে আসবে।”
এই কাঁচা রাস্তাটি পাকা হলে যেমন মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে, তেমনি স্থানীয় কৃষি, শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থাও এক নতুন সম্ভাবনার দিগন্তে পৌঁছাবে বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...