বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত দুই মাসে অন্তত ১০০টির বেশি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। অনেকেই আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন, কেউ কেউ উন্মুক্ত মাঠে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে বসবাস করছেন।
মানিকহারের পার্থ দাস বলেন, “গত বছরও কিছু জমি নদীতে গেছে, কিন্তু এ বছর ভাঙন যেন থামছেই না। আমার কৃষি জমি ও বসতভিটা সব নদীতে বিলীন হয়েছে।”
মধুপুর গ্রামের গ্রাম পুলিশ মাজেদ সরদার বলেন, “প্রতিদিনই মনে হয় আজই হয়তো নদী আমাদের ঘর টেনে নেবে। বউ-বাচ্চাদের নিয়ে ভীষণ ভয়ে থাকি।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একাধিকবার ভাঙন পরিদর্শন করলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্ষার তীব্র স্রোতের কাছে প্রতিবছর নেওয়া অস্থায়ী বালুভর্তি পদক্ষেপও অকার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে।
৭নং উরফি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির গাজী বলেন, “পরিস্থিতি মারাত্মক। আমরা জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আরও শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রিফাত জামিল জানান, “মানিকহার বাজার থেকে মধুমতি নদী ভাঙনের সমস্যা দীর্ঘদিনের। স্থায়ী সমাধানের জন্য ডিপিপি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, যা গত অর্থবছরে অনুমোদিত হয়নি। আমরা এবছর পুনরায় পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ও অর্থ বরাদ্দ পেলে স্থায়ী ও টেকসইভাবে কাজ করা সম্ভব হবে। যদিও প্রতিবছর আমরা বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলি, তবুও ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে গেছে। ইতোমধ্যেই ফসলি জমি, ঘরবাড়ি ও গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। খবর পেয়ে আমাদের একটি টিম সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করব।”
স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিবছর এই অস্থায়ী পদক্ষেপই আমরা পাই, কিন্তু এখন পর্যন্ত স্থায়ী সমাধান নেই। যদি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, আমরা আরও বড় ক্ষতির মুখোমুখি হব।”
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...