মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগীরা (ইনসেটে মো. কবির হোসেন)। ছবি: সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় এক আদেশে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করেছে। একইসঙ্গে পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উপ বন সংরক্ষক) ড. মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান মিঞাকে বরিশাল বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বরিশাল বিভাগীয় উপকূলীয় অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি ইমেইল তিনি পেয়েছেন।
এদিকে একই দিনে বন কর্মকর্তা কবির হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বরিশাল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট হাফিজ আহম্মেদ বাবলু স্ব-প্রণোদিত হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মেট্রোপলিটন প্রথম আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মো. সাদিক আহম্মেদ মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী ২০ নভেম্বর।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বিদেশে পড়াশোনা করানো, সরকারি চাকরি দেওয়া, বিমানবালা হিসেবে সুযোগ করে দেওয়া বা সম্পত্তি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক নারীর সঙ্গে প্রতারণা করে বিয়ের নাটক সাজিয়েছেন কবির হোসেন। এর আগে ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত থাকাকালীন তিনি ১৭টি বিয়ে করেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
মামলার বাদী অ্যাডভোকেট হাফিজ আহম্মেদ বাবলু জানান, আসামি কবির হোসেন পাটোয়ারী চাঁদপুরের মতলব উপজেলার বাসিন্দা। মুসলিম ফ্যামিলি আইনের ১৯৬১ সালের ৬ ধারার বিধান লঙ্ঘন করে প্রথম বিবাহ গোপন রেখে একের পর এক ১৭টি বিয়ে করা ধর্মীয় মূল্যবোধ, দেশীয় সংস্কৃতি ও সামাজিক শৃঙ্খলার প্রতি চরম চ্যালেঞ্জ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বরিশাল নগরীর কাশিপুর বন সংরক্ষক কার্যালয়ের সামনে ‘ভুক্তভোগী পরিবার ও সুশীল সমাজের’ ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে ঢাকার নাজনিন আক্তার শীলা, নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া, খুলনার নাসরিন আক্তার দোলনসহ ১৭ নারী দাবি করেন, বন কর্মকর্তা কবির হোসেন তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নারীরা অভিযোগ করেন, সর্বশেষ খুলনার চাকরিজীবী খাদিজা আক্তারকে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেন কবির হোসেন। বিয়ের দ্বিতীয় দিনেই তিনি স্ত্রীর বাবার বাড়ির সম্পত্তির অংশ লিখে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের বরখাস্ত আদেশ এবং আদালতের মামলা—দুই সিদ্ধান্তেই স্পষ্ট হয়েছে, দীর্ঘদিনের অভিযোগ ও অভিযোগকারীদের প্রতিবাদের পর এবার আইন ও প্রশাসনের জবাবদিহি শুরু হয়েছে এই আলোচিত বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
প্রতিবেদক- মোঃ জাহিদুল ইসলাম, বরিশাল।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...