ছবি: সংগৃহীত।।
বিজ্ঞাপন
যশোরের ঐতিহ্যবাহী মণিহার সিনেমা হল দেশের বৃহত্তম এবং একসময় এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রেক্ষাগৃহ হিসেবে খ্যাতি পেয়েছিল। একসময় সারা বছরই দর্শকের ভিড়ে মুখর থাকত এই হল। তবে বর্তমানে সেই জৌলুশ আর নেই। হল মালিক জিয়াউল ইসলাম মিঠু জানান, এখন দুই ঈদ ছাড়া দর্শকরা হলে মুখ দেখান না, ফলে লোকসানের বোঝা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে মণিহার টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এক আলাপচারিতায় তিনি জানান, দেশি নতুন ছবির অভাবে টলিউডের পুরোনো ছবি দিয়ে হল সচল রাখা হচ্ছে। বর্তমানে চলছে জিতের ‘অভিমান’ ছবির চতুর্থ প্রদর্শনী, তবে দর্শক সমাগম নেই বললেই চলে। কারণ এসব ছবি সহজেই টেলিভিশন, মোবাইল বা ইউটিউবে পাওয়া যায়। গত কোরবানি ঈদের পর থেকে ঢালিউডে নতুন ছবির খরা চলছে, ফলে মণিহারে নতুন বাংলা সিনেমা নেই।
হলটি টিকিয়ে রাখতে কমপ্লেক্সভুক্ত দোকান, হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টার থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে বলে জানান মিঠু। তিনি বলেন, একসময় দেশে ১৩০০ সিনেমা হল ছিল, এখন তা নেমে এসেছে মাত্র ৭০-৭৫টিতে। এর মধ্যে অনেকগুলোই ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে, আর মণিহারও শিগগির বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
মিঠুর মতে, ভালো মানের নতুন ছবি না পাওয়া ও আর্ট ফিল্মের দর্শক সংকট সিনেমা হলের প্রধান সমস্যা। আগে প্রতি সপ্তাহে দুটি ছবি পাওয়া যেত, এখন মাসেও দুটি ছবি মেলে না। তিনি মনে করেন, ভালো ছবি নির্মাণের পাশাপাশি বিদেশি ছবি আমদানির সুযোগ রাখলে হলগুলো বাঁচানো সম্ভব। তবে সম্প্রতি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হলেও এখনো ছবি আমদানির অনুমতি মেলেনি।
উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালের ৮ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে মণিহার। আধুনিক স্থাপত্যশৈলী ও কিংবদন্তি চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের তত্ত্বাবধানে সাজসজ্জা সম্পন্ন হওয়া এ প্রেক্ষাগৃহে ১৪০০ আসন রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর দ্রুতই এটি খ্যাতি অর্জন করলেও বর্তমানে ঢালিউডের মন্দা পরিস্থিতি এবং আমদানি নিষেধাজ্ঞার কারণে টিকে থাকার সংকটে পড়েছে দেশের বৃহত্তম এই সিনেমা হল।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...