ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
তবে তিনি উল্লেখ করেছেন, যে কোনো দল যদি গণহত্যা বা প্রতিষ্ঠান ধংসে জড়িত পাওয়া যায়, তাদের বিরুদ্ধে বিচার ও দণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।
বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি খুব পরিষ্কার করে বলি, ... আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই। কিন্তু যদি সেই রাজনৈতিক দল কোনো গণহত্যার সঙ্গে জড়িত হয়, দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে দেয়ার জন্য দায়ী হয় তাহলে নিশ্চয়ই তাদের শাস্তি পেতে হবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমি একটা রাজনৈতিক দল, আরেকটা রাজনৈতিক দলকে ব্যান করতে যাবো কেন? কিন্তু যদি সেই পার্টি জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে, প্রতারণা করে, গণহত্যা করে তাহলে অবশ্যই তার বিচার হতে হবে।”
আওয়ামী লীগের বিষয়ে তীব্র সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, “দেশের সবচেয়ে পুরনো দল হওয়ার পরেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা নিজেরাই নিজেদের মেরে ফেলেছে। তারা সমস্ত চরিত্রকে বিলীন করে দিয়ে একটা ফ্যাসিস্ট দলে পরিণত হয়েছে। ফলে তাদের প্রতি সাধারণ মানুষের ভালোবাসাও নেই, আস্থাও নেই। আওয়ামী লীগের যারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত, যারা ইনস্টিটিউশন নষ্ট করায় জড়িত তাদের সবার বিচার হওয়া উচিত, পাশাপাশি দণ্ডও দেয়া উচিত।”
ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “অবশ্যই নির্বাচন হবে, ফেব্রুয়ারিতেই হবে। তবে যে অবিশ্বাস মানুষের মাঝে তৈরি হয়েছে সে অবিশ্বাস দূর করে বিশ্বাস সৃষ্টির জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে, সেভাবে এগুতে হবে।” তিনি উল্লেখ করেন যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসও নির্বাচনে অংশগ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকের পর এ বিষয়ে সহযোগিতা আছে।
ফখরুল একাধিকবার দুই-দলীয় বিভাজনের কারণে দেশে আস্থা কমে যাওয়ার কথাও বলেন। তিনি বলেন, “আমাদের আনফরচুনেটলি ১৫ বছরের রাজনৈতিক যে বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে। এই বিভাজনের ফলে রাজনৈতিক দল, মিডিয়া কিংবা সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। সে অবিশ্বাসটাকে দূর করা দরকার। এখন মানুষের মধ্যে আস্থা স্থাপন করা দরকার।”
রাজনৈতিক জোট ও জোটসঙ্গী সম্পর্কে প্রশ্নে তিনি বলেন, “রাজনীতিতে শেষ বলে কোনো কথা নেই। আমাদের জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়নি। দল করতে হলে সবার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখতে হবে।” এনসিপি ও জামায়াতকে তিনি ‘বার্গেইনিং’ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, দলগুলো কখনো কখনো আলোচনা ও দরকষাকষি করে; এটাকে অপরাধ মনে করা উচিত নয় বরং আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব।
একই সাক্ষাৎকারে, ভারতের একটি পত্রিকায় প্রকাশিত সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন যে তিনি কখনও কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানাননি, এবং জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে কোনো স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবও করেননি; তবে অপরাধ প্রমাণিত হলে বিচার হওয়া উচিত—এই নীতিতেই তিনি অটল।
তবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “যেই মুহূর্তে সব লিগ্যাল সমস্যাগুলো শেষ হবে, যেই মুহূর্তে আমরা মনে করবো, রাজনৈতিকভাবে সময় তৈরি হয়েছে তখনই তারেক রহমান দেশে আসবেন। তিনি এখন জাতীয় নেতা। তার সমস্ত নিরাপত্তা আমাদের দিতে হবে।” তিনি জোর দিয়েছেন যে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এ সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পেশাদার নেতারা; এ ভ্রমণের সুযোগে মির্জা ফখরুল বিভিন্ন স্তরের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত মীটিং করেছেন বলে জানা গেছে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...