বিজ্ঞাপন
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বাঘমারাবিলসহ কয়েকটি মাঠে ফুটেছে জলজ ফুলের রানী শাপলা ফুল। ভাদ্রের মাঝামাঝি সময়ে কলি থেকে ফুল ফোটা শুরু হয়ে এখন তা চলমান রয়েছে। শীতের আগমনী পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন জলজ উদ্ভিদ গবেষকরা।
তাড়াশ উপজেলার সদর ইউনিয়নের সোলাপাড়া, মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের দোবিলা ও ঘরগ্রামসহ নওগাঁ ইউনিয়নের শাকুয়াদিঘী বাঘমারা বিলে ফুটেছে শাপলা ফুল। আর বিলের প্রতিদিন শাপলা ফুল দেখতে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন।
নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সী মানুষ ঘুরে ঘুরে উপভোগ করছেন এই অপরূপ সৌন্দর্য। কেউ কেউ শাপলা ফুল সংগ্রহ করছেন, কেউ বা সেলফি তুলে স্মৃতি ধরে রাখছেন।
শাপলা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা স্কুল শিক্ষিকা বিলকিস আক্তার বলেন, বিলের শাপলা ফুল দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। বিলের অপরুপ দৃশ্যটি মানুষের মনে দাগ কাটার মতো। শাপলা ফুল ও তার পাতা স্পর্শ করলে মনে হয় যেন সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে প্রবেশ করেছি। বিলের শাপলা ফুল গুলো আশপাশের পরিবেশটাকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। সাদা-লাল রঙের শাপলা ফুলের মাঝে সবুজ রঙের পাতাগুলো পরিবেশটাকে অন্য রকম করে তুলেছে।
শাপলা বিলে ঘুরতে আসা দর্শক ডাঃ নুর মোহাম্মদ বলেন, যতটা ভেবেছিলাম তার চেয়েও সুন্দর জায়গাটা। আসলে এর সৌন্দর্য বলে বোঝানো সম্ভব না। অন্য রকম এক ভালো লাগা কাজ করে। মন ভালো হতে বাধ্য আপনার।
স্থানীয়রা জানান, এই বিলটিতে বর্ষাকালে অসংখ্য শাপলা ফুল ও পদ্মফুল ফোটে। শাপলা ফুল দেখার জন্য অনেক মানুষের সমাগম হয়। নৌকা দিয়ে বিলটি ঘুরে দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। অনেক দর্শনার্থী মনের আনন্দে কিংবা ছবি তোলার জন্য ফুল ছিঁড়ছেন। অনেকে আবার ফুল ছিঁড়ে বাসায় নিয়ে প্রিয়জনকে উপহার দিচ্ছেন। এতে বিলটিতে শাপলা ফুলের সংখ্যা দিনদিন কমে আসছে এবং বিলের সৌন্দর্যও বিনষ্ট হতে চলেছে। সাধারণত পুরোনো গাছের কন্দ ও বীজের সাহায্যে পদ্মের বংশবিস্তার হয়ে থাকে। এভাবে যদি ফুল ছেঁড়া অব্যাহত থাকে, তাহলে বংশবিস্তার কমে যাবে এবং বিলটির অপরূপ সৌন্দর্য হুমকির মুখে পড়বে। এ অবস্থায় বিলটি সংরক্ষণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলেও স্থানীয়রা জানান।
তাড়াশ ডিগ্রি কলেজে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক চন্দ্র নারায়ন ভৌমিক জানান,
চলনবিলে পদ্ম একটি বহুবর্ষজীবি জলজ উদ্ভিদ। শাপলা ফুলের একটি পরিপক্ষ বীজ এক হাজার বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। অনুকূল পরিবেশ পেলে সে আবারও বংশ বিস্তার করে থাকে। চলনবিলে ফোটা পদ্মের ক্ষেত্রেও সেটিই হয়েছে। চলনবিলের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন নামে ১ হাজার ৭৫৭ হেক্টর আয়তনের ৩৯টি বিল। এসব বিলে পদ্ম, শাপলা, মাখনা, সিঙ্গট,গেচু, চেচুয়া, ভাতসোলা সহ বহু প্রজাতির সপুষ্পক,ফার্ন, মস ও শৈবাল পাওয়া যেতো। এরমধ্যে অনেকগুলোই বিপন্ন এবং বেশ কিছু প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান জানান, শাপলা বিলের শত শত শাপলা ফুল ফুটতে দেখা যাচ্ছে। শাপলা ফুল সংরক্ষণের জন্য কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি। তবে ভবিষ্যতে কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করা যায় কি না সেটা বিবেচনায় রয়েছে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...