বিজ্ঞাপন
সাক্ষীদের বরাত ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মহড়ায় সাতটি মোটরসাইকেলে ১৪ জন পুলিশ সদস্য অংশ নেন। তাঁদের সঙ্গে ছিল একটি পিকআপ গাড়ি, যেখানে আরও ৬ থেকে ৮ জন পুলিশ সদস্য ছিলেন। মোট ২০ থেকে ২২ জন সদস্যের এই টিম বিকেল ৩টা থেকে এক ঘণ্টা ধরে আলফাডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন সড়ক, বাজার, গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও জনবহুল এলাকায় টহল দেয় এবং পরে থানায় ফিরে আসে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মহড়ার উদ্দেশ্য ছিল জনগণের জানমাল রক্ষা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা। মহড়াকালীন পুলিশ সদস্যরা জনসাধারণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান এবং প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতার অনুরোধ করেন।
তবে, হেলমেটবিহীন পুলিশ সদস্যদের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘এফ ডি নিউজ ওয়ান’ ফেসবুক পেজে মহড়ার ভিডিও প্রকাশ করলে নেটিজেনদের ক্ষোভ উপচে পড়ে।
রাফিন হোসেন নামের এক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, “মহড়া দিলেন, হেলমেট নেই, অথচ মোড়ে মোড়ে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করেন!” ইমন খান লিখেছেন, “একটারও হেলমেট নেই!” রবিদুল ইসলাম প্রশ্ন তোলেন, “পুলিশের হেলমেট লাগে না?” আর মো. মামুন জানতে চান, “তারা কি আইনের ঊর্ধ্বে?”
এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহড়ার সময় আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল আলম থানায় উপস্থিত ছিলেন না। তিনি ফরিদপুর শহরে দাপ্তরিক কাজে ছিলেন। তবে, তাঁর নির্দেশেই মহড়াটি পরিচালিত হয় বলে নিশ্চিত করেছেন অভিযানে নেতৃত্বদানকারী উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম।
তিনি স্বীকার করে বলেন, “হেলমেট ছাড়া মহড়া আয়োজন করা ভুল ছিল। ভবিষ্যতে এমনটি আর হবে না।”
ওসি মো. শাহজালাল আলম ‘ভোরের বাণী’কে বলেন, “আমরা আইনের শাসক, তাই হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পুলিশ সদস্যদের এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।”
এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ফরিদপুর ইউনিটের সাবেক সভাপতি শিপ্রা গোস্বামী বলেন, “আইনের রক্ষকরা যদি নিজেই আইন ভঙ্গ করেন, তাহলে সাধারণ মানুষ কীভাবে আইন মানবে? যে পুলিশ সদস্য নিজেই হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালান, তিনি কীভাবে জনগণকে জরিমানা করবেন?”
স্থানীয়দের মতে, এই ঘটনার মাধ্যমে পুলিশের দায়বদ্ধতা ও শৃঙ্খলা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...