Logo Logo

বন্দরে বিদেশি অপারেটর নিয়োগে সমর্থন বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের


Splash Image

চট্টগ্রাম বন্দরের অদক্ষতা, জাহাজজট ও সিন্ডিকেট ভাঙতে বিদেশি অপারেটর নিয়োগ সময়োপযোগী—সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের মত


বিজ্ঞাপন


চট্টগ্রাম বন্দরের অদক্ষতা, জটিলতা এবং দীর্ঘদিনের সিন্ডিকেট প্রথা দূর করতে বিদেশি অপারেটর নিয়োগের সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির (বিএমইউ) শিক্ষার্থীরা। আজ দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ সিদ্ধান্তকে “সময়োপযোগী ও অর্থনৈতিকভাবে যুক্তিসঙ্গত” বলে মন্তব্য করেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্বজুড়ে উন্নত অনেক দেশেই বন্দর পরিচালনায় বিদেশি অপারেটর যুক্ত রয়েছে। ভারত, চীন, ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশের উদাহরণ তুলে ধরে তারা বলেন, এসব দেশে পিপিপি বা বিদেশি বিনিয়োগ মডেল ব্যবহার করে বন্দর ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশের বন্দরও সময়ে সঙ্গে তাল মেলাতে চাইলে আধুনিকায়নের বিকল্প নেই।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, লালদিয়া টার্মিনালসহ নতুন প্রকল্পগুলো BOT মডেলে গেলে সরকারের আলাদা করে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করতে হবে না। বিদেশি প্রতিষ্ঠানই অবকাঠামো তৈরি করবে এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পরিচালনা করে রাজস্ব দেবে। মেয়াদ শেষে পুরো টার্মিনাল রাষ্ট্রের মালিকানায় ফিরে আসবে এই বিষয়টি জনগণের সামনে আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরার পরামর্শও দেন তারা।

বন্দর কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রিতা, জাহাজজট, কাস্টমস জটিলতা ও অনিয়মের কথা তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা বলেন, আধুনিক সরঞ্জাম, অটোমেশন ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা থাকলে যেখানে একটি জাহাজ খালাসে এখন ৭–১২ দিন লেগে যায়, বিদেশি অপারেটর সেখানে ১৮–২৪ ঘণ্টায় কাজ শেষ করতে পারে। এতে রপ্তানি বাণিজ্য আরও প্রতিযোগিতামূলক হবে এবং আমদানি পণ্যের ব্যয় কমে সাধারণ ভোক্তাও উপকৃত হবেন।

বিদেশি অপারেটর এলে দেশীয় শ্রমিকদের চাকরি কমবে এমন আশঙ্কাকে শিক্ষার্থীরা ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেন। তাদের দাবি, নতুন টার্মিনাল মানেই নতুন কর্মসংস্থান। প্রযুক্তি বদলালে দক্ষতার চাহিদা বাড়ে, আর এতে দেশীয় জনশক্তিই লাভবান হয়। আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ পেলে বাংলাদেশি শ্রমিকরা ভবিষ্যতে আরও বেশি সুযোগ পাবে বলেও তারা মত দেন।

সার্বভৌমত্ব নিয়ে যেসব প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, তা ‘রাজনৈতিক অপপ্রচার’ উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, বন্দরের নিরাপত্তা, কাস্টমস, ইমিগ্রেশন বা নিয়ন্ত্রণ সবই সরকারের হাতেই থাকবে। অপারেটরের কাজ কেবল নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রযুক্তিগত ও ব্যবস্থাপনাগত সেবা দেওয়া।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, অনেকদিন ধরে বন্দর ব্যবস্থায় যে অদক্ষতা ও দুর্নীতির কাঠামো গড়ে উঠেছে, সেটি ধরে রাখতে কিছু মহল বিদেশি অপারেটর নিয়োগের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, কোনো চাপ বা অপপ্রচারের মুখে নতি স্বীকার না করে বন্দর সংস্কারের সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনের শেষে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির পোর্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড লজিস্টিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোস্তফা আজিজ শাহিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বন্দর পরিচালনার আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা, প্রযুক্তিগত ঘাটতি ও আধুনিক ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...