বিজ্ঞাপন
এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে আগেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ঢাকা জেলা জামায়াতের শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াস মোল্লার নাম। বিপরীতে বিএনপি ফরিদপুরের চারটি আসনের মধ্যে তিনটিতে প্রার্থী ঘোষণা করলেও ফরিদপুর-১ আসনটি এখনো স্থগিত রেখেছে।
জামায়াত ও বিএনপির পাশাপাশি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশও তাদের দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখনো প্রার্থী না দিলেও একাধিক নেতা মনোনয়ন কিনে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। জাতীয় পার্টিও প্রার্থী ঠিক করলেও দলটি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা, তা এখনো কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়।
ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল নির্বাচনী পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে মাঠে রয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুদ্দীন মিয়া (ঝুনু) এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মনিরুজ্জামান মৃধা।
তিনজনই নিজ নিজ উপজেলায় গণসংযোগ, সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ও জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে গত ২৩ অক্টোবর তিন উপজেলায় গঠিত ১০১ সদস্যবিশিষ্ট ছয়টি বিএনপি কমিটি নিয়ে বিরোধ চরমে ওঠে। কমিটিতে খন্দকার নাসিরুলের সমর্থকদের প্রাধান্য এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু হয়। সর্বশেষ ৭ নভেম্বর সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের হয়, যার আসামি হয়েছেন নাসিরুল ও শামসুদ্দীন।
খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, “দল কেন প্রার্থী ঘোষণা দেয়নি তা দলই ভালো বোঝে। কেন্দ্রীয় নেতারা আমাকে ধৈর্য ধরতে বলেছেন।”
শামসুদ্দীন মিয়া দাবি করেন, “ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের লোকদের কমিটিতে রাখা হয়েছে। এ কারণেই আন্দোলন চলছে।”
মনিরুজ্জামান মৃধা বলেন, “আমি বিএনপিকে জনগণের কাতারে ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি।”
ফরিদপুর-১ আসনে ঐতিহ্যগতভাবে আওয়ামী লীগের প্রভাব বেশি। ১৯৯১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির কোনো প্রার্থী জয়লাভ করতে পারেননি। ব্যতিক্রম ছিল ২০০৫ সালের উপনির্বাচন, যেখানে বিএনপির শাহ মো. আবু জাফর বিজয়ী হন। তবে ২০০৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ফের আওয়ামী লীগের আধিপত্য ফিরে আসে।
শাহ মো. আবু জাফর বর্তমানে ফের আলোচনায়। তিনি জানান, বিএনপি বা জোটের সমর্থন পেলে নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত, তবে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সামর্থ্য তার নেই।
জামায়াত প্রার্থী মো. ইলিয়াস মোল্লা তিন উপজেলা জুড়ে সভা-সমাবেশ, মোটর শোভাযাত্রা, বাড়ি বাড়ি গণসংযোগ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নারীকর্মীদের অংশগ্রহণেও বাড়ি বাড়ি প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমি প্রায় এক বছর ধরে এলাকায় কাজ করছি। এই আসনে বিজয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। পরিবর্তনের পর আমি কোনো মামলা করিনি, কাউকে নির্যাতনও করা হয়নি।”
এনসিপির ফরিদপুর জেলার জ্যেষ্ঠ আহ্বায়ক এস এম জাহিদ জানান, এখনো তাদের দল কোনো প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা জোরদার রয়েছে।
জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি এস এম ইয়াহিয়া জানান, দল নির্বাচনে গেলে আকরামুজ্জামান তাদের প্রার্থী হবেন, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে কেন্দ্র থেকে।
এ আসনে আরও প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন— বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মুফতি শারাফাত হোসাইন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ওয়ালিউর রহমান ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মুফতি মো. জাকির হোসাইন কাসেমী।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (২০২৪) ফরিদপুর-১ আসনে ভোটার ছিলেন ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৯৮১ জন। ত্রয়োদশ নির্বাচনে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ১৪৬ জন।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...