Logo Logo
ক্যাম্পাস

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে ইনকিলাব মঞ্চের সংবাদ সম্মেলন


Splash Image

ছবি : সংগৃহীত।

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই "জুলাই সনদ" বাস্তবায়ন ও জুলাইয়ে সংঘটিত গণহত্যার বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইনকিলাব মঞ্চ।


বিজ্ঞাপন


সোমবার (১৬ জুন) বেলা ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদী বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই সনদ ঘোষণা করার জন্য যে ৩০ দিনের সময় নিয়েছিল তা শেষ হবে আগামী ২৫ জুন। অথচ সনদ ঘোষণা করতে আর মাত্র ৯ দিন বাকি থাকলেও উপদেষ্টা পরিষদ এখনো পর্যন্ত এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠকও করেনি বলে আমরা জানতে পেরেছি।”

তিনি আরও বলেন, “জুলাইয়ে সংগঠিত গণহত্যার বিচার ও রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ছাড়া যদি জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হয়, তাহলে আমরা ড. ইউনূসকে ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ গাদ্দার ঘোষণা করবো।”

সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চ জুলাই সনদের প্রস্তাবিত কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ১৩টি প্রস্তাবনা উত্থাপন করে। প্রস্তাবনাগুলো হলো—

১. জাতীয় স্বীকৃতি: ১৯৪৭, ১৯৭১ এবং ২০২৪ সালের সংগ্রামে জীবনদানকারী শহীদদের রাষ্ট্রীয়ভাবে শ্রেষ্ঠ সন্তান ঘোষণা।

২. জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসন: স্থায়ীভাবে অঙ্গহানি হওয়া জুলাই যোদ্ধাদের জন্য পূর্ণ পুনর্বাসন ব্যবস্থা।

৩. অবৈধ নির্বাচনের বাতিল: ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনের অবৈধ ঘোষণা এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশনার ও জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা।

৪. দুর্নীতিবাজদের শাস্তি: ফ্যাসিবাদী আমলের দোষী মন্ত্রী-এমপি ও আমলাদের বিচার ও অবৈধ সম্পদের বাজেয়াপ্তকরণ, যা শহীদ ও আহতদের কল্যাণে ব্যবহৃত হবে।

৫. জাতীয় স্বার্থে ঐক্য: স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ভারতীয় আগ্রাসনসহ সকল বহিরাক্রমণের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলা।

৬. গণহত্যার বিচার: জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করে দেশি-বিদেশি জড়িত অপশক্তিকে চিহ্নিত করা।

৭. রাষ্ট্রীয় সংস্কার: রাষ্ট্র কাঠামোতে মৌলিক সংস্কার করে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরতন্ত্র চিরতরে বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ।

৮. মুক্তি দিবস ঘোষণা: ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস হিসেবে ঘোষণা।

৯. ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন: বৈষম্যবিরোধী ও কল্যাণমুখী ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্রের স্পষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন।

১০. সংবিধান সংশোধন: জনবিরোধী ও সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ধারাগুলো বাতিল করে জুলাই সনদকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা।

১১. ন্যায্য শরিকানা নিশ্চিত: ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত ও লিঙ্গের ন্যায্য অংশগ্রহণ স্বীকৃতি।

১২. সনদের ভাষাগত সরলীকরণ: জনগণের বোধগম্যতার জন্য সনদের ভাষাকে সহজ ও প্রাঞ্জলভাবে উপস্থাপন।

১৩. জনমত গ্রহণ: চূড়ান্তকরণের পূর্বে সনদের খসড়া প্রকাশ করে জনগণের মতামত গ্রহণ।

সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চ নেতৃবৃন্দ বলেন, “এই সনদ শুধুই একটি দলীয় আহ্বান নয়, এটি আগামী প্রজন্মের স্বাধীনতা ও সম্মান নিশ্চিত করার রূপরেখা।”

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীসহ জুলাই আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিতের পর নির্বাচন : শফিকুল ইসলাম মাসুদ
রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিতের পর নির্বাচন : শফিকুল ইসলাম মাসুদ
সারা দেশে এক লাখ শিক্ষক নিয়োগ : এনটিআরসিএ’র ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
সারা দেশে এক লাখ শিক্ষক নিয়োগ : এনটিআরসিএ’র ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ