বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুর ৩টায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের নকলা উপজেলা শাখায় আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
সাংবাদিক রানা বলেন, “একজন সৎ সাংবাদিক হিসেবে আজ আমি এক দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তার প্রতিহিংসার শিকার। ঘুষ না দেওয়ার অপরাধে আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।”
তিনি জানান, তিন মাস আগে এসআই কামরুজ্জামান তাকে ফোন করে ডিবি অফিসে ডাকেন এবং একটি পারিবারিক মামলায় পক্ষীয় প্রতিবেদন দেওয়ার শর্তে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় এসআই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
সাংবাদিক রানা বলেন, “তিনি আমাকে স্পষ্ট বলেন— টাকা না দিলে প্রতিবেদন আপনার বিপক্ষে যাবে। আমি ঘুষের কাছে মাথানত করিনি, আর করবও না। তখন থেকেই তিনি আমার সাংবাদিক পরিচয় উপেক্ষা করে আমাকে হয়রানি করতে শুরু করেন।”
তিনি আরও জানান, তার সাবেক স্ত্রী জান্নাতুল মল্লিকা মুন্নি, যিনি প্রায় ১৩ বছর সংসার করেছেন, তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হলে ডিভোর্স হয়। এরপরেই শুরু হয় জমি ও বসতঘর সংক্রান্ত একতরফা মামলা। সেই মামলার তদন্তে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলায় বলা হয়, তিনি সাবেক স্ত্রীর দখলীয় জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে ঘরবাড়ি ভেঙেছেন, ভাড়াটিয়াকে তাড়িয়ে দিয়েছেন এবং বেড়া ভেঙে ৫ হাজার টাকার ক্ষতি করেছেন। অথচ ওই জমি তিনি ২০১৪ সালে বৈধভাবে ক্রয় করেন এবং নিজেই বাড়ি নির্মাণ করেন।
তিনি বলেন, “আমি কোনোদিন ঘরজামাই ছিলাম না। অথচ বাদী পক্ষ তাদের বাবা, ভাই, ভাবি ও ছেলেকে— যারা সবাই শেরপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা— তাদের সাক্ষী বানিয়েছে। ঘটনা ঘটেছে নকলা উপজেলায়, অথচ কোনো প্রতিবেশী বা নিরপেক্ষ মানুষকে সাক্ষী করা হয়নি।”
সাংবাদিক রানা আরও বলেন, “আমার সাবেক স্ত্রীর বান্ধবীর সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ থেকেই ডিভোর্স হয়। সেটাকে ইস্যু বানিয়ে আমাকে প্রতিহিংসার শিকার করা হচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদনে সত্যতা যাচাই না করে বানানো অভিযোগগুলো টাকার বিনিময়ে লেখা হয়েছে।”
তিনি বলেন, এসআই কামরুজ্জামানের তদন্ত প্রতিবেদনে রয়েছে—
১) ১৩ বছর সংসার করার পর ডিভোর্স,
২) জমি দখল করে তালা লাগানো,
৩) ঘর ভাঙচুর ও ভাড়াটিয়া তাড়ানো,
৪) বাদী ও সাক্ষীদের হুমকি,
৫) বেড়া ভেঙে ৫ হাজার টাকার ক্ষতি।
এসব অভিযোগ তিনি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে সাংবাদিক রানা বলেন, “একজন সাংবাদিকের পেশাগত সম্মান ও সামাজিক অবস্থানকে কলঙ্কিত করতেই এই অপচেষ্টা। আমি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি— নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সত্য বের করে আনুন। এসআই কামরুজ্জামানের মতো কর্মকর্তার পুলিশের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে থাকার কোনো অধিকার নেই।”
তিনি আরও জানান, “যদি জেলা পুলিশ সুপার ব্যবস্থা না নেন, তাহলে আমি আইজিপি বরাবর লিখিত অভিযোগ করব।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—
দৈনিক ইত্তেফাকের সিনিয়র সাংবাদিক ও মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের উপদেষ্টা মো. হযরত আলী, সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাইসুল ইসলাম রিফাত, কোষাধ্যক্ষ আইনুল নাইম, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন মিয়া, সদস্য মো. জহিরুল ইসলাম, ডিএসবি রুহুল আমীনসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীবৃন্দ।
-নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি