ভারতে মুসলিমদে উচ্ছেদ অভিযানের দৃশ্য, ছবি- সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, বুলডোজার দিয়ে মূলত মুসলিমদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার গওয়ালপাড়া জেলার পাইকান রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায় সরকারি উচ্ছেদ অভিযানের সময় পুলিশের গুলিতে এক মুসলিম যুবক নিহত হন। আরও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং বহু আহত ব্যক্তিকে গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।
সরকারি তথ্যে বলা হয়েছে, প্রায় ১৪০ হেক্টর বনভূমি দখলমুক্ত করতে এই অভিযান চালানো হয়। কিন্তু বাস্তবে প্রায় ১,০৮০টি পরিবার উচ্ছেদ হয়ে গেছে, যাদের অধিকাংশই বাঙালি ভাষাভাষী মুসলিম। স্থানীয়দের দাবি, তারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই এলাকায় বসবাস করে আসছেন—বন সংরক্ষণের ঘোষণার বহু আগে থেকেই।
বুলডোজার অভিযানের ইতিহাস
এটি একদিনের ঘটনা নয়। গত জুন মাসেই গওয়ালপাড়ার হাসিলাবিল এলাকায় একইভাবে ৬৯০ মুসলিম পরিবারের বসতি ধ্বংস করা হয়েছিল। বিরোধীরা অভিযোগ করছে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মুসলিমবিরোধী বক্তব্য ও নীতির কারণে এ ধরনের পদক্ষেপ বেড়েছে।
২০২৩ সালের আগস্টে তিনি প্রকাশ্যে বলেছিলেন, “আমি পক্ষ নেব। এটিই আমার আদর্শ।”
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, রাজ্যে তৈরি হওয়া এই বিদ্বেষপূর্ণ পরিবেশ সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ফেলেছে।
৩,৫০০ পরিবার বাস্তুচ্যুত
স্ক্রল ডট ইন-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক মাসে আসামের চারটি জেলায় অন্তত পাঁচটি বড় উচ্ছেদ অভিযানে প্রায় ৩,৫০০ পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বড় একটি অংশ মুসলিম পরিবার। বিরোধী দলগুলো একে ‘বুলডোজার জাস্টিস’ বলে অভিহিত করেছে।
২০২৩ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ভারতের মুসলমানদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলে, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বিতর্কিত মন্তব্য করেন, “আমার রাজ্যে অনেক হুসেইন ওবামা আছে, তাদের দেখভাল করবে পুলিশ।” এই মন্তব্যকে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস ইসলামবিদ্বেষী হিসেবে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছিল।
সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে
বিশেষজ্ঞদের মতে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ), ওয়াকফ আইন পরিবর্তন এবং উচ্ছেদ অভিযান একসাথে মিলে আসামের মুসলিমদের অস্তিত্বকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এ ধরনের পদক্ষেপ কেবল সামাজিক বৈষম্যই বাড়াবে না, বরং নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করবে।
এমকে
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...