Logo Logo

শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া


Splash Image

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে চলমান সীমান্ত সংঘাতের অবসানে শর্তহীন যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এসেছে। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে মধ্যস্থতামূলক এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


বিজ্ঞাপন


বৈঠক শেষে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম জানান, দুই দেশ তাৎক্ষণিকভাবে শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং এটি সোমবার মধ্যরাত থেকে কার্যকর হবে।

আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, “কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড একটি অভিন্ন সমঝোতায় পৌঁছেছে। যার প্রথম শর্ত, তাৎক্ষণিক ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতি। এই যুদ্ধবিরতি সোমবার রাত ১২টা (স্থানীয় সময়) থেকে কার্যকর হবে।”

গত পাঁচ দিন ধরে চলা সীমান্ত সংঘর্ষে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর গোলাবর্ষণ, রকেট হামলা ও গুলিবিনিময়ের ফলে অন্তত দুই লাখ মানুষ সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে গেলে, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়ার শঙ্কা দেখা দেয়।

কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত শান্তি চুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “থাইল্যান্ডের সঙ্গে যে শর্তহীন যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে, তা দুই দেশের মধ্যে পাঁচ দিন ধরে চলা সংঘর্ষের পর সম্পর্কের স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার সুযোগ তৈরি করেছে। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের ঘোষণা দেওয়া সমাধানমূলক সব পদক্ষেপ আমাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনার অগ্রগতির ভিত্তি তৈরি করবে এবং সম্পর্কের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়ার পথ খুলে দেবে।”

সোমবার দুপুরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন সেরি পেরদানায় থাই ও কম্বোডিয়ার নেতাদের গাড়িবহর পৌঁছায়। এই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পক্ষ থেকেও প্রতিনিধি ও পতাকাবাহী গাড়ি উপস্থিত ছিল, যা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক আগ্রহের ইঙ্গিত দেয়।

থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত স্থানীয় সময় সকাল ৭টার কিছু পর কুয়ালালামপুরে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকের সময় মালয়েশিয়ার রাজধানীর আকাশে নজরদারি উড়োজাহাজ চক্কর দিতে দেখা যায়, যা নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে নেওয়া হয়।

বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। তিনি বলেন, “উভয় পক্ষ দ্রুত যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে আগ্রহী” এবং এই লক্ষ্যে কাজ করছেন।

আঞ্চলিক উত্তেজনা কমাতে মালয়েশিয়ার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের সক্রিয় ভূমিকা এবারের সমঝোতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন ও দীর্ঘস্থায়ী সমঝোতার মাধ্যমে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া আবারও পারস্পরিক আস্থা ও কূটনৈতিক সংলাপে ফিরে যাবে—এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...