বিজ্ঞাপন
এই তথ্য নিশ্চিত করেছে স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
আল জাজিরা’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আক্রমণে অধিকাংশ হতাহতের ঘটনা ঘটে বিতর্কিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) পরিচালিত সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে। নিহত ৬২ জনের মধ্যে অন্তত ৩৮ জন এমন সহায়তা কেন্দ্রে গিয়েছিলেন, যেগুলো পরিচালিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সরাসরি সহায়তায়।
অন্যদিকে, জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুধু ৩০ ও ৩১ জুলাই—এই দুইদিনেই খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ১০৫ ফিলিস্তিনি। সংস্থাটির হিসাবে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ নিতে গিয়ে মোট ১,৩৭৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
অপুষ্টি ও অনাহারেও গাজাবাসীদের মৃত্যু থেমে নেই। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত অনাহারে মারা গেছেন আরও ১৬৯ জন, যাদের মধ্যে রয়েছে ৯৩ জন শিশু।
গত সপ্তাহেই ইসরায়েল ঘোষণা দিয়েছিল, মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে তারা প্রতিদিন কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় “কৌশলগত হামলার বিরতি” দেবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয় ২৭ জুলাই থেকে। তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কিছু। সহায়তা নিতে যাওয়া অসংখ্য ফিলিস্তিনি সরাসরি ইসরায়েলি সেনা ও যুক্তরাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত কন্ট্রাক্টরদের গুলির মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।
গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমালোচনার ঝড় উঠলেও সহায়তার পরিমাণ এখনও খুবই সীমিত। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার মাত্র ৩৬টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে, যেখানে প্রতিদিনের প্রয়োজন অন্তত ৬০০টি ট্রাক।
বিভিন্ন দেশ—বিশেষ করে জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, স্পেন, জার্মানি ও ফ্রান্স—বিমান থেকে ত্রাণ ফেলা শুরু করেছে। তবে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তা সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ (UNRWA) জানিয়েছে, আকাশপথে পাঠানো ত্রাণ একেবারেই অপ্রতুল। তাদের মতে, জরুরি ভিত্তিতে স্থলপথে সহায়তা প্রবেশের পথ খুলে দেওয়া এখন সময়ের দাবী।
মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনাকারী সংস্থাগুলিও নিরাপদ নয়। শনিবার খান ইউনিসে ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদর দপ্তরে চালানো ইসরায়েলি হামলায় এক কর্মী নিহত এবং আরও তিনজন আহত হয়েছেন। হামলায় ভবনের নিচতলায় আগুন ধরে যায় বলে ‘এক্স’ প্ল্যাটফর্মে (সাবেক টুইটার) জানায় সংস্থাটি।
গাজার দেইর আল-বালাহ শহর থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খোদারি জানিয়েছেন, “সাম্প্রতিক ত্রাণ সরবরাহ সত্ত্বেও পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। বাজারে খাবার নেই বললেই চলে, যা আছে তাও খুব বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “মানুষকে এখন প্রতিদিনই জীবন ঝুঁকিতে ফেলে খাবার সংগ্রহ করতে হচ্ছে।”
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...