Logo Logo

রপ্তানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং ফি ৪৪% বৃদ্ধি, ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ


Splash Image

প্রতীকী ছবি।

গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে বেসরকারি ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) সমূহে রপ্তানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং চার্জ সর্বোচ্চ ৪৪% পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা) নতুন এ হার কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ী মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।


বিজ্ঞাপন


নতুন কাঠামো অনুযায়ী, রপ্তানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং চার্জ ৩৬% থেকে ৪৪% পর্যন্ত বাড়বে। একই সঙ্গে খালি কনটেইনার হ্যান্ডলিং চার্জও বেড়েছে সর্বোচ্চ ৩১.৮%। তবে আমদানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং চার্জ অপরিবর্তিত থাকছে।

বিকডার মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, “গত কয়েক বছরে আমাদের পরিচালন ব্যয় ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তাই বিকল্প না পেয়ে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।”

অন্যদিকে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) এ সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। বিজিএমইএ পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, “আইসিডিগুলোতে ইতিমধ্যেই ধারণক্ষমতার সংকট চলছে। কোনো প্রকার আলোচনাই না করে চার্জ বাড়ানো রপ্তানি খাতকে আরও সংকটে ফেলবে।” তিনি তাৎক্ষণিকভাবে নতুন হার প্রত্যাহারের দাবি জানান।

নতুন হারের চিত্র

২০ ফুট রপ্তানি কনটেইনারের চার্জ বাড়বে ৬,১৮৭ টাকা থেকে ৯,৯০০ টাকায়।

৪০ ফুট কনটেইনারের ক্ষেত্রে ৮,২৫০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ১৩,২০০ টাকা।

নতুন করে ৪০ ফুট হাই-কিউব ও ৪৫ ফুট কনটেইনারের জন্য চার্জ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪,৯০০ টাকা।

এছাড়া গ্রাউন্ড ভাড়া, ডকুমেন্টেশন ফি ও লিফট-অন/লিফট-অফ চার্জও বাড়ানো হয়েছে।

২০ ফুট কনটেইনারের গ্রাউন্ড ভাড়া বেড়েছে ১১৫ টাকা থেকে ১৫০ টাকা।

৪০ ফুট বা তার চেয়ে বড় কনটেইনারের ক্ষেত্রে ২৩০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০০ টাকা।

টনপ্রতি ল্যান্ডিং চার্জ ২০৭ টাকা থেকে ২৭০ টাকা।

ডকুমেন্টেশন ফি ২৭৬ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা।

লিফট-অন/লিফট-অফ চার্জ ৫১২ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৫০ টাকা।

খালি কনটেইনার পরিবহন খরচও বেড়েছে। এখন ২০ ফুট খালি কনটেইনার পরিবহন ফি ১,৭০৫ টাকা থেকে বেড়ে হবে ২,৫০০ টাকা এবং ৪০ ফুট হাই-কিউব বা ৪৫ ফুট খালি কনটেইনারের ক্ষেত্রে ৩,৪১০ টাকা থেকে বেড়ে হবে ৪,০০০ টাকা।

বর্তমানে দেশের ১৯টি বেসরকারি আইসিডি প্রায় ৯৩% রপ্তানি পণ্য এবং ২০% আমদানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করে থাকে।

এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষও নতুন সেবাশুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে, যা জুলাই মাসে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়েছে। প্রস্তাবিত হারে গড়ে ৪১% বৃদ্ধি ধরা হয়েছে। তবে এ নিয়ে তীব্র বিরোধিতা করছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো।

২৫ আগস্ট শিপিং উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষসহ প্রায় ২০টি সংগঠনের বৈঠক হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সyed মোহাম্মদ আরিফ বলেন, “সব পক্ষই একমত হয়েছে যে ১০% এর বেশি শুল্ক বাড়ানো যাবে না। ব্যবসাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে অগ্রসর হওয়া সম্ভব নয়।”

বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “যদি বাড়াতেই হয় তবে গড়ে ১০% এর বেশি বাড়ানো উচিত নয়। অতিরিক্ত চার্জ রপ্তানিকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে।”

আগামী ৫ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে পুনরায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...