বিজ্ঞাপন
সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এই ১২ জনের মধ্যে সর্বশেষ বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান ৩১ আগস্ট পদত্যাগ পত্র জমা দেন। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি তার পদত্যাগপত্র ৭ সেপ্টেম্বর গ্রহণ করেছেন।
সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১৫ অক্টোবর রাতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের তৎকালীন সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম ফেসবুকে হাইকোর্ট ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেন। তারা অভিযোগ করেন, ‘দলবাজ, দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টের দোসর’ বিচারকদের পদত্যাগ প্রয়োজন।
পরের দিন, ১৬ অক্টোবর, শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে হাইকোর্ট চত্বরে পৌঁছান। সমন্বয়করা দক্ষিণ গেট দিয়ে ঢুকে হাইকোর্ট অ্যানেক্স ভবনের সামনে অবস্থান নেন। স্লোগানের মধ্যে যুক্ত ছিলেন অন্য শিক্ষার্থীরাও। একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজও বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
সেই সময় কিছু বিচারপতি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আলোচনার পর বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা (বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি) ছাত্রদের সামনে বলেন, “বিচারপতিদের পদত্যাগ বা অপসারণের উদ্যোগ রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে হয়ে থাকে। প্রধান বিচারপতি এর দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন। ১২ জনকে আপাতত কোনো বেঞ্চ দেওয়া হচ্ছে না, তাই তারা ২০ অক্টোবর কোর্টে বিচার কাজ করতে পারবেন না।”
বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের এই কাউন্সিল কার্যক্রম শুরু করে। অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।
সংবিধান অনুযায়ী, কাউন্সিল প্রধান বিচারপতি ও জ্যেষ্ঠ দুইজন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত। কাউন্সিল কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রেরণ করেন এবং প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান পরিচালনা করেন।
২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগের ১২ জন বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগের পর তাদের বেঞ্চ প্রদান থেকে বিরত রাখা হয়। এদের মধ্যে:
* বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন ৩০ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতিকে স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে পদত্যাগ করেন।
* বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম ও এস এম মাসুদ হোসাইন দোলন স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাননি; তারা অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে ২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন।
* বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান ও আশীষ রঞ্জন দাস ইতোমধ্যেই অবসর গ্রহণ করেছেন।
* রাষ্ট্রপতি দুইজনকে অপসারণ করেছেন—বিচারপতি খিজির হায়াতকে ১৮ মার্চ এবং বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে ২১ মে।
এখন অবশিষ্ট চার বিচারপতির বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...