বিজ্ঞাপন
সকাল থেকেই সুপ্রিম কোর্ট ও ট্রাইব্যুনালপাড়ার প্রবেশপথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থান দেখা যায়। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবির বিশেষায়িত টিম দায়িত্ব পালন করছে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও নিরাপত্তায় রয়েছেন। পথচারী, আইনজীবী, সাংবাদিক—সবার পরিচয় যাচাই করে তবেই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
ট্রাইব্যুনাল চত্বর ও সুপ্রিম কোর্টের ভেতর–বাইরে কড়া নজরদারি বজায় রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সাধারণ মানুষের চলাচলেও নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা দেখা গেছে। দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রায়–পরবর্তী পরিস্থিতির ঝুঁকি বিবেচনায় পুরো দিনজুড়ে এ কঠোর নিরাপত্তা বজায় থাকবে।
এর আগে সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই মামলায় রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল–১ এর তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় ঘোষণা করেন। অন্য সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
মামলায় প্রসিকিউশন মোট পাঁচটি অভিযোগ তুললেও রায়ে দুটি অভিযোগে ছয়টি ঘটনা তুলে ধরে ট্রাইব্যুনাল। প্রথম অভিযোগে তিনটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়। এর প্রথমটি ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে উসকানিমূলক বক্তব্য। দ্বিতীয়ত, ওই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মাকসুদ কামালের সঙ্গে কথোপকথনে আন্দোলনকারীদের ‘ফাঁসি দেওয়ার’ নির্দেশনামূলক বক্তব্য। একই অভিযোগে বলা হয়, অপরাধ সংঘটনে অধীনস্তদেরও কোনো বাধা দেননি আসামিরা। তৃতীয় ঘটনাটি রংপুরে আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার বিষয়, যা এসব উসকানির পর সংঘটিত বলে উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনাল। এসব অপরাধে শেখ হাসিনা ও কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় অভিযোগেও তিনটি ঘটনা আনা হয়। ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার সঙ্গে সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর কথোপকথনে ড্রোন ব্যবহার করে অবস্থান নির্ণয় এবং হেলিকপ্টার ও মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের হত্যার নির্দেশনা ছিল বলে ট্রাইব্যুনাল উল্লেখ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট ঢাকার চানখারপুলে ছয়জন আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা এবং সেদিনই সাভারের আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনাকে অভিযোগের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এসব অপরাধে শেখ হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ড এবং তাদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে আগামী জুলাইয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
উভয় অভিযোগে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডও বহাল থাকে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...