ছবি- সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
সৌদি আরবের বিশ্ববিখ্যাত মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সুযোগ পেয়েছেন বাংলাদেশের তিন কওমি আলেম। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে নিয়োগ পাওয়া এই তিনজন আলেম হলেন— মাওলানা শরীফ আহমাদ আল মাদানি, মাওলানা এরশাদুর রহমান ও মাওলানা মোশাহিদ দেওয়ান।
তাদের মধ্যে মাওলানা শরীফ আহমাদ আল মাদানি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাপূর্ণ হাদিস বিভাগে শিক্ষকতা করবেন। আগামীকাল রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) থেকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠদান শুরু করবেন। এরশাদুর রহমান আরবি ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউটে (মাহাদু তালিমিল লুগাহ আল আরাবিয়াহ) এবং মোশাহিদ দেওয়ান শরিয়াহ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে পাঠদান শুরু করেছেন।
মাওলানা শরীফ আহমাদ আল মাদানির বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া গ্রামে। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে তিনি মসজিদে নববী একাডেমিতে শিক্ষক, পরীক্ষক ও প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১২ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ নিয়ে মদিনায় যান এবং ধাপে ধাপে আরবি ভাষা শিক্ষা, হাদিস বিভাগ থেকে অনার্স, মাস্টার্স ও এমফিল সম্পন্ন করে বর্তমানে পিএইচডি গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে ঢাকার জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ থেকে দাওরাতুল হাদিস ও ইফতা শেষ করেন তিনি।
মাওলানা এরশাদুর রহমান কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার পশ্চিম পানখালী গ্রামের বাসিন্দা। প্রাথমিক পড়াশোনা শুরু করেন কক্সবাজারের জামিয়া দারুস সুন্নাহ থেকে। পরে চট্টগ্রামের জামেয়া দারুল মাআরিফ আল ইসলামিয়াতে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন। উচ্চশিক্ষার জন্য মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আরবি ভাষা বিভাগ থেকে অনার্স ও এমফিল শেষ করে বর্তমানে তিনি পিএইচডি করছেন। তার এমফিল গবেষণার বিষয় ছিল ‘বাংলা ভাষায় আরবি ভাষার প্রভাব: একটি তুলনামূলক অধ্যয়ন’। এটি মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো বাংলা ভাষা নিয়ে একাডেমিক গবেষণা হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
মাওলানা মোশাহিদ দেওয়ানের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। ২০১৬ সালে সৌদি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্কলারশিপে তিনি মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে কুল্লিয়াতু লুগাতিল আরাবিয়্যাহ থেকে অনার্স এবং কিসমুল লুগায়িয়্যাত (ভাষাতত্ত্ব বিভাগ) থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি এমফিল গবেষণার শেষ পর্যায়ে রয়েছেন। এর আগে ঢাকার দারুল উলূম মাদানীনগর মাদরাসা থেকে তাকমিল (দাওরাতুল হাদিস) শেষ করে সম্মিলিত মেধা তালিকায় দশম স্থান অর্জন করেন। পাশাপাশি আলিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় জিপিএ-৫ এবং ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার অধীনে ফাজিল শেষ করেন।
বাংলাদেশি আলেমদের এ সাফল্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনছে। বিশেষ করে কওমি মাদরাসা থেকে উঠে আসা তিনজন আলেমের এ অর্জন তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে বলে মত দিয়েছেন শিক্ষানুরাগীরা।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...