বিজ্ঞাপন
রাজধানীর লুনেটা পার্কে সকালে প্রায় ১৩ হাজার মানুষ জাতীয় পতাকা ও নানা ধরনের ব্যানার-ফেস্টুন হাতে সমবেত হন। বিক্ষোভকারীরা ‘‘আর নয়, অনেক হয়েছে, কারাগারে পাঠাও’’ স্লোগান দিয়ে দুর্নীতিতে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান।
সহিংসতার আশঙ্কায় আগের রাতেই পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দেয় সরকার। অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনীও মোতায়েন করা হয়।
দুর্নীতিবিরোধী এই আন্দোলনে যুক্ত ছাত্রনেত্রী আলথিয়া ট্রিনিদাদ মার্কিন সংবাদমাধ্যম এপিকে বলেন, “আমরা দারিদ্র্যের মাঝে ডুবে আছি। আমাদের ঘরবাড়ি, জীবন ও ভবিষ্যৎ হারাচ্ছি। অথচ তারা আমাদের করের টাকা দিয়ে বিলাসবহুল গাড়ি কেনে, বিদেশ ভ্রমণ করে এবং বিশাল ব্যবসা করে। এটা আমাদের জন্য অসহনীয়।” তিনি আরও জানান, জনগণ এমন একটি ব্যবস্থার দাবি করছে, যেখানে কেউ আর শোষণের শিকার হবে না।
চলতি বছরের জুলাইয়ে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মারকোস জুনিয়র তার বার্ষিক ভাষণে ‘ভূতুড়ে অবকাঠামো প্রকল্পের’ কেলেঙ্কারি প্রকাশ করেন। পরে ৯ হাজার ৮৫৫টি বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের অনিয়ম তদন্তে তিনি একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করেন। এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪৫ বিলিয়ন পেসো (প্রায় ৯.৫ বিলিয়ন ডলার)।
তদন্তে প্রকাশ পায়, দেশটির ধনকুবের দম্পতি সারা ও প্যাসিফিকো ডিসকায়া পরিচালিত একাধিক নির্মাণ কোম্পানি এসব প্রকল্পের চুক্তি পেয়েছে। এ ছাড়া তাদের মালিকানাধীন ইউরোপীয় ও মার্কিন বিলাসবহুল গাড়ি এবং এসইউভির ছবি গণমাধ্যমে আসার পর জনমনে ক্ষোভ আরও তীব্র হয়।
জনগণের বিক্ষোভ নিয়ে প্রেসিডেন্ট মারকোস বলেন, “এই কেলেঙ্কারির প্রতিবাদে মানুষের ক্ষোভ আমি দোষারোপ করি না। তবে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ হওয়া জরুরি।” তিনি জানান, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনার মাত্র কয়েক দিন আগে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আরেক দেশ ইন্দোনেশিয়ায় সংসদ সদস্যদের বেতন বৃদ্ধি বাতিল ও চরম মূল্যস্ফীতির প্রতিবাদে দেশজুড়ে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করে। সেখানে পুলিশের সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে।
ফিলিপাইনে দুর্নীতি-বিরোধী এই গণপ্রতিবাদ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাম্প্রতিক বিক্ষোভ প্রবণতাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...